পত্র রচনা

শিকারের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে বন্ধুকে চিঠি

গরমের ছুটিতে শিকার করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি

শিকারের অভিজ্ঞতা । “শিকার” শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে এবং তার অর্থ বিষয়টির সাথে সম্পর্কিত। এটি কিছুটা সাধারিত অর্থে বা বিশেষ সংদর্ভে ব্যবহৃত হতে পারে। আইন বা সমাজের সাথে সংকৃষ্ট অর্থে এটি একজন ব্যক্তি বা কোনও বস্তুকে ক্ষতি করার অভিযোগ একাধিকভাবে বোঝাতে পারে।

সাধারিত অসম্ভাব্য অথবা ধর্মিক সংদর্ভে, “শিকার” শব্দটি সাধারিত অর্থে জীবন্ত পশু বা পাখি কে হুতি করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

শিকার হল খাদ্য, বিনোদন বা বাণিজ্যের জন্য বন্য প্রাণীদের তাড়া, ধরা এবং হত্যা করার অভ্যাস। শিকার হাজার হাজার বছর ধরে মানব সভ্যতার একটি অংশ এবং একসময় বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য ছিল। বর্তমানে, শিকার প্রাথমিকভাবে খেলাধুলার জন্য বা নির্দিষ্ট প্রজাতির অতিরিক্ত জনসংখ্যা রোধ করার জন্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসাবে করা হয়। যদিও বিশ্বের অনেক অংশে শিকার এখনও বৈধ, এটি সরকারী সংস্থা এবং শিকারের মরসুম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় যাতে এটি দায়িত্বশীল এবং টেকসই করা হয়। যাইহোক, শিকারও বিতর্কিত হতে পারে, কিছু লোক বিশ্বাস করে যে এটি নিষ্ঠুর এবং অপ্রয়োজনীয়।

শিকারের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে বন্ধুকে চিঠি

 মতিহার

৯ই জানুয়ারি, ২০২৩

প্রিয় হিমু,

আমার ভালবাসা নিয়ো। আজ তোমাকে আমি আমার সুন্দরবনের অভিজ্ঞতার কথা বলব । আমার কাছে এই অভিজ্ঞতা নূতন কিন্তু জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্ত যে কত মজাদার তা সুন্দরবনে শিকার করিতে গিয়া বুঝলাম। জানুয়ারির প্রথম দিকে বিখ্যাত শিকারী ক্যাপ্টেন আলমের পার্টিতে আমাকেও অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানালেন । আলম সাহেব একজন বিখ্যাত শিকারী। এই পর্যন্ত প্রায় ১৫-২০টা নরখাদক (Man eater) শিকার করে তিনি বহু পুরষ্কার লাভ করেছেন। শিকারে নেশা আছে, রোমাঞ্চ আছে, জীবনের একটা অর্থ এইটার মধ্যে খুজে পাওয়া যায়। ছেলেবেলা তে শিকারের দিকে আমার, আগ্রহের কথা তোমার অজানা নয়। কোনদিন বাঘ শিকার করতে পারিনি, কিন্তু ঐ রকম একটা জ্যান্ত শয়তানকে শিকার করার জন্য আমার আনেক দিনের ইচ্ছা ছিল ।

সুতরাং আলম সাহেবের পার্টিতে যোগদান করার পর আমার হাতদিনের ইচ্ছা পুরন হল। আমাদের পার্টিতে ১০ জন লোক। শিকারী আলম সাহেব ও আমি। অন্যান্য লোকজনের হতে দা, বর্শা এবং বাঁশের লাঠি। সকাল ৮টায় তৈয়ার হয়ে আমরা ডিঙি তে নেমে সুন্দরবনের মধ্যে প্রবেশ করলাম। সুন্দরবনের সুন্দরী গাছগুলি খুব সুন্দর, এদিকে-ওদিকে পাহাড়ের মত উঁচু অসংখ্য গাছের সারি, আশেপাশে ছোট ছোট গাছ। প্রতি পদক্ষেপে গা ছম্‌ছম্ করে উঠে।নদীর ধার দিয়ে ঘন জঙ্গল । সামনেই ফাঁকা মতো খানিকটা জায়গা। ওই খানে গিয়ে দারিয়ে পরলাম কিছুক্ষনের জন্য। কিছু দূর যেয়ে শুনি বিশাল বাঘের গর্জন । সামনে আমারা সবাই রায়ফেল নিয়ে দারালাম । ডান ও বাম দিকে একবার ঘুরে তাকালাম কোন দিকে বাঘ আছে কোজার জন্য, গতকাল একটি কাঠুরিয়া কে মেরে একটি ঝোপের কাছে তার মৃতদেহ ফেলে রেখেছে । তাই বেশিক্ষন আমরা ওই খানে দারালাম না । কিছু ক্ষন যেতেই আবার বাঘের ডাক শুরু। আমি ফিসফিস্ করে বললাম, ‘ক্যাপ্টেন সাহেব, শয়তানটা হয়ত বেশি দূরে নেই। বড় জোর বিশ গজ দূরে।’ আমার কথায় সায় দিয়া আলম সাহেব আমাকে কথা বলতে বারন করে নিজে রাইফেল দু-হাতে শক্ত করে ধরলেন । এক পা এক পা করে সামনের দিক এগুতে থাকলেন । সঙ্গে সঙ্গে আমিও। ডানদিকের গাছটা সন্তর্পণে অতিক্রম করিবার পরই দেখা গেল প্রকাণ্ড একটা ‘নর-খাদক’ একটা সুন্দরী গাছের নিচে শুইয়া আছে। উজ্জ্বল দৃষ্টি আমাদের দিকে প্রসারিত। আমরা দুইজনে ওই আমি ওনার দিকে তাকালাম । আমি বুঝতে পারছি যে সামনে কোণ বড়ো বিপদ আস্তে চলেছে । আমরা সবাই এক জোট হলাম । আমরা সবাই মাটিতে বসে পরলাম বন্দুক হাতে করে । বাঘ ততক্ষনে গাঝেরে উঠে দাঁড়ালো। সে এক পা এক পা করে আমাদের দিকে এগুতে থাকল । সাথে সাথে আমরাও, আর মাত্র পঁচিশ হাত দূরে। তখন অন্য কিছু ভাববার মতো সময় ছিল না। আলম সাহেব ও আমি এক সঙ্গে গুলী চালালাম। চোখের পলকে সে এক লাফে আমাদের উপর আসে পরল । আমরা কাজে দেরি না করে পর পর আরো কয়েকটি গুলী চালালাম। নর-খাদকটা এসে আমাদের চার হাত দূরে গোঁটা সুন্দর বন কে মনে হয় এক জায়গায় কোরে দিলো বীশাল একটি গর্জন কোরে । এবং আমাদের গুলিতে আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়েপরল ।দেখলাম, আমাদের দুটি গুলী ওর বুকে লেগে ফুটো  হয়ে গেছে । লোকজন হৈ হৈ করতে করতে এসে দাঁড়ালো আমাদের সামনে ।এইবার তেনারা দশহাত মাপের এই দীর্ঘ বাঘটাকে বাশে ঝুলিয়ে নিয়ে গাল । তিন চার দিন পর আমরা দেশে ফিরে এলাম ।সুন্দরবনে আমার এই শিকারের অভিজ্ঞতা তোমার কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবে । ইতি–

 

তোমার শুভাকাংখি

বিক্রম

বিক্রম মল্লিক

শিলং

হিমু ব্যানার্জি

উত্তরপ্রদেশ

ট্যাগ- শিকারের অভিজ্ঞতা চিঠি, শিকারের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে চিঠি।

এগুলিও পড়তে পারেন -

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button