
পেটের অসুখ ভুগছে এমন একটি রােগীর একটি সাধারণ খাদ্য তালিকা শেয়ার করা হল। এই তালিকাটি তাদের খুব কাজে আসবে বলে মনে করছি।
পেটের অসুখ ভুগছে এমন রােগীর খাদ্য তালিকা
পেটের অসুখঃ যে কোন রােগের ক্ষেত্রেই কোন রােগীর খাদ্য তালিকা তৈরি করতে হলে সেই রােগীর বয়স, লিঙ্গ, দৈহিক ওজন ও উচ্চতা এবং পেশা অনুযায়ী স্বাভাবিক অবস্থায় তার যে শক্তির প্রয়ােজন তাহা নির্ধারণ করতে হয়। সেই রােগের কারণে শরীরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ করে বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা নির্ধারণ করতে হয়।
পেটের অসুখ এমন একটি রােগ যার ফলে দেহ থেকে জল ও খনিজ পদার্থ অধিক পরিমাণে বর্জিত হয়ে দেহে জল এবং ইলেকট্রোলাইটের সাম্য বিঘ্নিত করে। যে জীবাণুর কারণে উদারময় হয়েছে তার ফলে জ্বর হতে পারে। উদরাময় আক্রান্ত রােগীর খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করতে হলে তাতে সাধারণ অবস্থা থেকে বেশি ক্যালােরির ব্যবস্থা রাখতে হবে। জ্বর হলে দেহে শক্তির প্রয়োজনীয় বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের রােগীর প্রােটিনের প্রয়ােজনীয়তাও বেশি হয়ে থাকে কারণ আমদের দেহে খাদ্য পাচিত হয় জারক রসের দ্বারা তার প্রােটিন দিয়ে তৈরি হয়, পরিপাক শক্তি বৃদ্ধি করতে হলে প্রােটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা দরকার। শরীর দুর্বল থাকায় কোন সংক্রামক রোগের , দ্বারাও আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কে ভিটামিন যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত এগুলিকে প্রতিরােধ করার জন্য। ইলেকট্রোলাইট সাম্য বজায় রাখতে প্রচুর জল ও জলীয় খাদ্য (0.R.S.) ইত্যাদি খাওয়া প্রয়োজন এই রােগে ঋণাত্বক জলসাম্য দূর করতে।
এটিও পড়ুন – কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা
তন্তু জাতীয় খাদ্য তেল মশলাযুক্ত খাদ্য খাওয়া উচিত নয় এই রােগীর ক্ষেত্রে কারণ তন্তু জাতীয় খাদ্য পাচিত না হয়ে মলের বৃদ্ধির পার্শ্বকে উত্তেজিত করে। আধঘণ্টা অন্তর O.R.S. বা নুন-চিনির জল খওয়াতে হয় রােগের গুরুতর অবস্থায় রােগীকে। অন্যান্য তরল খাদ্য, যেমন সবজি, কম ফ্যাটযুক্ত মাছ বা মাংসের স্যুপ, বার্লির সরবত ইত্যাদি কিছু সময় অন্তর (১.০০ – ১.৩০ ঘণ্টা) খাওয়াতে হবে রােগীর অবস্থার কিছু উন্নতি হলে। এরপর দেহ থেকে মল নিষ্ক্রমণের গতি কমলে এবং মলের চেহারা তরল থেকে কঠিন আকার ধারণ করলে রােগীকে কঠিন-খাদা দেওয়া হবে। তন্তু জাতীয় পদার্থ থাকবে না এই খাদ্যে। মিহি খাদ্য যেমন গমের ভূষি বাদ দিয়ে ময়দা, কলে ছাঁটা সিদ্ধ চাল, সবজি খােসা ছাড়িয়ে বা খােসা সমেত সিদ্ধ করে পরে খােসা ফেলে দিয়ে, জীবন্ত মাছ, ছােট মাছ, মুরগীর স্ট্রু ইত্যাদি। প্রথমদিকে মাছ ভাত সুসিদ্ধ করে ছেকে কাথ খাওয়াতে হবে। রােগমুক্তির পর তেল ও ঘি-এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। খাদ্যে শাকপাতা, ডাল বর্জন করতে হবে। ছানা, মাখন, ডিমের কুসুম, দই ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় থাকবে।
খাদ্য তালিকা (উদারময় নিয়ন্ত্রিত হলে)
সময় | খাদ্য | পরিমাণ | পুষ্টিমূল্য |
সকাল ৭টা | ময়দার পাউরুটি | ২ পিস | শ্বেতসার |
দুধ | ১০০ মিলি | প্রােটিন। | |
মাখন | ৫ গ্রাম | স্নেহ পদার্থ | |
সকাল ১০টা | মুসুম্বিলেবুর রস | ১টি | ভিটামিন সি। |
সকাল ১২টা | ভাত (গলা) | ১৫০ গ্রাম | খনিজ লবণ |
আলু | ২৫ গ্রাম | শ্বেতসার | |
পটল | ২৫ গ্রাম | ভিটামিন | |
মাছ (কম ফ্যাটযুক্ত) | ৫০ গ্রাম | প্রােটিন। | |
বিকাল ৩টে, | আপেল | ১টি | প্রােটিন |
বিকাল ৫টা | পুডিং | ৫০ গ্রাম | প্রােটিন |
রাত্রি ৮টা | ভাত | ১২৫ গ্রাম | শর্করা। |
মুরগীর স্টু, আলু ও গাজর সমেত | ১৫০ গ্রাম | প্রােটিন, ক্যারোটিন |
পেটের অসুখ অর্থাৎ তরল মল দেহ থেকে বারবার নিষ্ক্রান্ত হয় তখন রােগীকে কোন কঠিন খাদ্য দেওয়া হয় না প্রথম ২ দিন তরল খাদ্য যেমন লবণ সামান্য, চিনি ২ চামচ এবং ফুটানাে জলের (১ গ্লাস) মিশ্রণ আধঘণ্টা অন্তর বারবার খাওয়াতে হবে। অন্য কোন তরল খাদ্য, যেমন মাছ বা মাংসের স্যুপ, ডালের বা সবজির স্যুপ, বার্লি, চিনি, অল্প দুধ মিশিয়ে সরবত, ছানার জল ইত্যাদি খাওয়ানাে দরকার রােগীর অবস্থার উন্নতি হলে। এরপর আরও উন্নতি হলে অর্ধেক তরল ও অর্ধেক কঠিন খাদ্য, যেমন এগনগ্ (দুধ ও ডিমের মিশ্রণ) পুডিং মাংসের স্টু ইত্যাদি দেওয়া প্রয়ােজন। এরপর যখন মল কঠিন অবস্থায় পরিণত হবে তখন ভূষি বা ছিবড়াহীন, তন্তু ব্যতীত খাদ্য দিতে হবে। অর্থাৎ সেলুলােজ জাতীয় পদার্থ থাকবে না খাদ্যে। যাতে পরিপাক শক্তি বৃদ্ধি পায় তার জন্য উচ্চ জৈবমূল্যের প্রােটিন অর্থাৎ প্রাণিজ প্রােটিন দিতে হবে। জল ও জলীয় খাদ্য এবং ভিটামিন ও খনিজ লবণ যুক্ত খাদ্য খেতে হবে যাতে জল ও ইলেকট্রোলাইট সাম্য বজায় থাকে।
এটিও পড়ুন – গাঁদা ফুলের উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন, #১ আয়ুর্বেদিক ট্রিটমেন্ট
ট্যাগঃ পেটের অসুখ ভুগছে এমন রােগীর খাদ্য তালিকা, জেনে নিন পেটের অসুখ ভুগছে এমন রােগীর খাদ্য তালিকা, পেটের অসুখ ভুগছে এমন রােগীর খাদ্য তালিকা PDF সহ।