উৎসবপূজা পদ্ধতি

 শ্রীশ্রী লক্ষ্মীদেবীর পূজা পদ্ধতি । Lakshmi Devi

লক্ষ্মী দেবীর পূজা পদ্ধতি | Lakshmi Devi Puja Rule | Lakshmi Mantra

লক্ষ্মীদেবীর পূজা পদ্ধতি: হিন্দু শাস্ত্রমতে লক্ষ্মী হলেন অর্থের দেবী। লক্ষ্মী তুষ্ট হলে ধন সম্পত্তির কোন অভাব ,হয় না। তাই প্রত্যক্তি বাঙালি ও অবাঙ্গালী হিন্দুদের বাড়ি লক্ষ্মী পূজা হয়ে থাকে। তিনি ধনসম্পদ ছারাও আধ্যাত্মিক সম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী। তিনি বিষ্ণুর পত্নী। লক্ষ্মীকে অনেকে মহালক্ষ্মীইনি স্বত্ত্ব গুন ময়ী হিসেবে জানে।  লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা।

জেনে নিন – এবছর কবে লক্ষ্মী পূজা? এবং লক্ষ্মী পূজা করলে কি অর্থ প্রাপ্তি ঘটে। 

 শ্রীশ্রী লক্ষ্মীদেবীর পূজা পদ্ধতি

স্তব :

“নমানি সৰ্ব্বভূতানাং বরদাসি হরিপ্রিয়ে, যা গতিস্তৃৎ প্রপন্নানাং সা মে। ভয়াদৰ্জ্জনাৎ।”

গায়ত্রীঃ

“ওঁ মহালস্থ্যৈ বিঘ্নহে মহাশ্রিয়ৈ ধীমহি তন্নঃ শ্রীঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ। নমঃ, ওঁ শ্রীকুবেরায় নমঃ।” মন্ত্রে প্রণাম করিবেন।

পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্রঃ

“লক্ষ্মীস্ত্বং সর্ব্বদেবানাং যথাসম্ভব-নিত্যশঃ। স্থিরা ভব তথা দেবি মম জন্মনি জন্মনি৷ বন্দে বিষ্ণুপ্রিয়াং দেবীং দারিদ্র দুঃখনাশিনীং। ক্ষীরোদসম্ভবাং দেবীং বিষ্ণুবক্ষঃবিলাসিনীম্৷৷”

প্রণামঃ

“নমোঃ বিশ্বরূপস্য ভার্য্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে। সৰ্ব্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী নমোঽস্তু তে। নমো গণেশায় বাসুদেবায় লক্ষ্মীদেব্যৈ নমো নমঃ।”

ব্রতের নিয়ম :

প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাকালে শুদ্ধচিত্তে সধবা স্ত্রীলোক শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর পূজা করিবেন। ইহাতে কোন তিথি নক্ষত্রের বিধি নিষেধ নাই। পূজা স্থানটিগোবর জলে পরিষ্কার করিয়া পিটুলী গোলার আলপনা দিয়া ধূপ, ধূনা, প্রদীপাদি জ্বালাইয়া দিবেন।

ঘটস্থাপন :

গঙ্গাজল বা কূপের জলে একটি ঘট পূর্ণ করিয়া তাহাতে আম্রশাখা, একটি সশীষ ডাব বা কলা, সিন্দুর, চন্দন ও ঘটের নিম্নে সামান্য মাটি ও ধান্য দিবেন। নিষেধ: লক্ষ্মীপূজায় ঘণ্টা বাজাইতে নাই ও ঘট বিসর্জন হইবে না।

উপকরণঃ

নানাবিধ ফল এবং আতপ চাউল দিয়া নৈবেদ্য সাজাইবেন। মিষ্টান্ন, বাতাসা, সন্দেশ, গুড় সাধ্যমত দিবেন। পান, সুপারি পৃথক ভাবে সাজাইয়া রাখিবেন।

 শ্রীশ্রী লক্ষ্মীদেবীর পূজা পদ্ধতির পূজা প্রকরণঃ

শুদ্ধ কাপড় পরিধান করিয়া পবিত্র মনে উত্তরমুখে উপবেশন করিয়া “নমো বিষ্ণু” এই মন্ত্র উচ্চারণপূর্ব্বক মুখে তিনবার জলের ছিটা দিবেন। “নমো ঐ অপবিত্রঃ পরিত্রো বা সৰ্ব্বাবস্থাং গতোঽপি বা, যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্য অভ্যন্তরঃ শুচি।” এই মন্ত্র পাঠকরতঃ যব, হরীতকী, সামান্য জল হস্তে লইয়া মস্তকে জলের ছিটা দিবেন। স্থাপিত ঘটে “এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ গণপত্যাদি নানা দেবতাভ্যো নমঃ।” বলিয়া ঐ পূজা করিবেন। “এতে গন্ধপুষ্পে নমঃ শ্রীং লক্ষ্মৈঃ নমঃ।” মন্ত্রে তিনবার গন্ধপুষ্প দিয়া নিম্নলিখিত মন্ত্রে ধ্যান করিবে।

“ওঁ পাশাক্ষমালিকাত্তোজ সৃণিভিৰ্য্যাম্যসৌম্যয়োঃ।
পদ্মাসনস্থাং ধ্যায়েচ্চ শ্রিয়ং ত্রৈলোক্যমাতরম্।
গৌরবর্ণাং সুরূপাঞ্চ সর্ব্বালঙ্কার-ভূষিতাম্।
রৌশপদ্মব্যগ্রকরাং বরদাং দক্ষিণেন তু।”

ধ্যানাস্তে করজোড়ে দেবীকে মনে মনে আবাহন : করিয়া “এতৎ পাদ্যং শ্রীং লক্ষ্যে নমঃ,” ইত্যাদি প্রকারে পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয়, গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, পানার্থ, পুনরাচমনীয় ও তাম্বুল দিবেন। ইহার পরে “শ্রীং” মন্ত্র দশবার জপ করিবেন। জপের পর “নমস্তে সর্ব্বভূতানাং বরদাসি হরিপ্রিয়ে। যা গতিস্ত্বৎ প্রপদ্মানাং সা মে ভূয়াত্ববদৰ্চ্চনাৎ।” মন্ত্রে পুষ্পাঞ্জলি দিয়া “নমো বিশ্বরূপস্য ভার্য্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে। সৰ্ব্বতঃ পাহি মাং দেবি মহালক্ষ্মী নমোহস্তু তে।” মন্ত্রে প্রণাম করিবেন। অতঃপর “এতে গন্ধপুষ্পে নমো বিষ্ণবে নমঃ, নমো কুবেরায় নমঃ, নমো ইন্দ্ৰায় নমঃ, নমো অষ্টনিধিভ্যো নমঃ। “মন্ত্রে পূজা করিয়া প্রণাম করিবেন। পূজার সময় পাঁচটি বা তিনটি সধবা স্ত্রীলোক থাকিবেন। পূজা সমাপনান্তে সধবা স্ত্রীলোকগণ উলুধ্বনিপূৰ্ব্বক = পরস্পর পরস্পরকে সিন্দুর পরাইয়া ভক্তিপূৰ্ব্বক গলে কাপড় দিয়া দেবী লক্ষ্মীকে প্রণাম করিবেন। অতঃপরে ব্রতচারিণিগণ হস্তে দূর্ব্বা ও আতপ চাউল লইয়া ব্রতকথা শুনিবেন।

এটিও জেনে নিন – শ্রী শ্রী লক্ষ্মীদেবীর প্রতি বৃহস্পতিবারের ব্রতকথা

ট্যাগঃ  শ্রীশ্রী লক্ষ্মীদেবীর পূজা পদ্ধতি PDF, জেনে নিন  শ্রীশ্রী লক্ষ্মীদেবীর পূজা পদ্ধতি

এগুলিও পড়তে পারেন -

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button