স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টির প্রয়ােজনীয়তা ও তালিকা
যে খাবার গুলি খেলে মা ও শিশু উভয়ে ভালো থাকবে

স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টির প্রয়ােজনীয়তাঃ গর্ভাবস্থা থেকে স্তন্যদানরত অবস্থায় মায়েদের অধিক সইতে হয়, কারণ পূর্ণ বিকশিত বর্ধনশীল শিশুর খাদ্যের চাহিদা দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর পুষ্টিগত চাহিদার পূরণ সম্পূর্ণভাবে মাতৃদুগ্ধের উপরই নির্ভরশীল। যেহেতু মাতৃদুগ্ধের উপাদানগুলি মায়ের শরীর থেকে আসে, | সেহেতু উপযুক্ত খাদ্যের মাধ্যমে মাতৃদেহে এসবের যােগান দেওয়া আবশ্যক। মা এবং শিশু উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্য রক্ষার্থে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য তথা সুষম খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরী। গর্ভাবস্থায় যেসব খাদ্য দেওয়া হয়, স্তন্যদানরত অবস্থায় সেইসব খাদ্য অধিক পরিমাণে দিতে হবে। অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণে মাতৃদুগ্ধের উৎপাদন প্রায় অপরিবর্তিত থাকে। ফলে মায়ের মাতৃদুগ্ধ উৎপাদিত হলেও মায়ের নিজের শরীর ভেঙে যায়। ফলে মা নিজেই অপুষ্টির শিকার হন। দুগ্ধ উৎপাদন এবং ক্ষরণে দেহ গঠনকারী এবং সংরক্ষণ পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি শক্তি প্রদায়ী খাদ্যও প্রয়ােজন।
স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টির প্রয়ােজনীয়তা
গর্ভাবস্থা থেকে স্তন্যদানরত অবস্থায় মায়েদের অধিক সইতে হয়, কারণ পূর্ণ বিকশিত বর্ধনশীল শিশুর খাদ্যের চাহিদা দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর পুষ্টিগত চাহিদার পূরণ সম্পূর্ণভাবে মাতৃদুগ্ধের উপরই নির্ভরশীল। যেহেতু মাতৃদুগ্ধের উপাদানগুলি মায়ের শরীর থেকে আসে, | সেহেতু উপযুক্ত খাদ্যের মাধ্যমে মাতৃদেহে এসবের যােগান দেওয়া আবশ্যক। মা এবং শিশু উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্য রক্ষার্থে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য তথা সুষম খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরী। গর্ভাবস্থায় যেসব খাদ্য দেওয়া হয়, স্তন্যদানরত অবস্থায় সেইসব খাদ্য অধিক পরিমাণে দিতে হবে। অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণে মাতৃদুগ্ধের উৎপাদন প্রায় অপরিবর্তিত থাকে। ফলে মায়ের মাতৃদুগ্ধ উৎপাদিত হলেও মায়ের নিজের শরীর ভেঙে যায়। ফলে মা নিজেই অপুষ্টির শিকার হন। দুগ্ধ উৎপাদন এবং ক্ষরণে দেহ গঠনকারী এবং সংরক্ষণ পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি শক্তি প্রদায়ী খাদ্যও প্রয়ােজন।
স্তন্যদানরত অবস্থায় পুষ্টিগত চাহিদা
(I.C. M.R.- R.D.A. (1989) অনুযায়ী স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টিগত চাহিদা নিম্নে আলােচিত হল)
শক্তি ছ’মাস বয়স পর্যন্ত শিশু মাতৃদুগ্ধের উপর পুরােপুরি নির্ভরশীল হওয়ায় শক্তির চাহিদা পুরােপুরি মাতৃদুগ্ধ থেকেই আসে। তাই শক্তির প্রথম ছয় মাসে শক্তির চাহিদা অপেক্ষাকৃত বেশি লাগে। হালকা, মাঝারি এবং ভারী কাজে অভ্যস্ত মায়েদের ক্যালোরি চাহিদার তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। অতিরিক্ত হিসাবে প্রথম ছমাস ৫৫০ কিলােক্যালােরি এবং ছ’মাসের পর এক বছর পর্যন্ত ৪৪০ কিলােক্যালােরি যােগান দিতে হবে।
প্রােটিনঃ ৬-১২ মাস বয়সের শিশুদের জন্য মায়েদের অতিরিক্ত ১৮ গ্রাম এবং ০৬ মাস বয়সের বাচ্চাদের জন্য অতিরিক্ত ২৫ গ্রাম প্রােটিন দিতে হবে। প্রথমােক্ত ক্ষেত্রে শিশুদের প্রােটিনের চাহিদা শেষােক্ত শিশুদের তুলনায় বেশি হলেও, চাহিদার কিয়দংশ weaning খাবার থেকে আসে।
ফ্যাট: শক্তির চাহিদা এই বিশেষ শারীরবৃত্তীয় সর্বাধিক হওয়ায় ফ্যাটের পরিমাণ ৪৫ গ্রাম হওয়া বাঞ্ছনীয়, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫ গ্রাম বেশি।
ক্যালসিয়াম: গর্ভাবস্থার অনুরূপ অর্থাৎ দৈনিক ১০০০ মিগ্রা। স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০০ মিগ্রা বেশি। কারণ শিশুর অস্থিতন্ত্রের দ্রুতবৃদ্ধি।
লৌহ: স্তন্যদানরত মায়েদের দৈনিক লৌহের চাহিদা ৩০ মিলিগ্রাম রাখতে হবে কারণ দুগ্ধে লৌহ কম থাকে এবং এই লৌহ গর্ভাবস্থায় যকৃতে সঞ্চিত লৌহ থেকেই আসে। এছাড়াও স্তন্যদানরত অবস্থায় মাসিক বন্ধ থাকায় লৌহের প্রয়ােজনীয়তা স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় অবস্থার অনুরূপ।
এটিও পড়ুন – প্রসূতি মায়ের খাদ্য তালিকা
ভিটামিন-এ: অতিরিক্ত ৩৫০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন-এ’ খাদ্যের মাধ্যমে যােগান দিতে হবে। কারণ মাতৃদুগ্ধ ভিটামিন-এ’ সমৃদ্ধ। উল্লেখযোগ্য ভিটামিন -এ’ সমৃদ্ধ খাদ্যগুলি হল যকৃত, ডিমের কুসুম, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
থায়ামিন, রাইবােয্রেভিন এবং নিকোটিন অ্যাসিড: যেহেতু এই তিনটি ভিটামিনের চাহিদা শক্তির চাহিদার সাথে সম্পর্কিত, তাই শক্তির চাহিদা পরিবর্তিত হলে এদের চাহিদা পরিবর্তিত হয়। প্রতি ১০০০ কিলােক্যালারিতে এদের চাহিদা যথাক্রমে ০.৫ মিগ্রা, ০.৫৫ মিগ্রা এবং ৬.৬ মিগ্রা। প্রথম ছমাসে এই সব ভিটামিনের অতিরিক্ত চাহিদা যথাক্রমে ০.৩ মিগ্রা, ০.৩ মিগ্রা ও ৪ মিগ্রা, ৬ মাস – ১ বছর পর্যন্ত অতিরিক্ত চাহিদা যথাক্রমে ০.২ মিগ্রা এবং ৩ মিগ্রা।
অ্যাসকরভিক অ্যাসিড: দৈনিক চাহিদা ৮০ মিগ্রা, যা স্বাভাবিকের দ্বিগুণ। কারণ মাতৃদুগ্ধে ভিটামিন-‘সি’ ও মিগ্রা/১০০ মিগ্রা উপস্থিত থাকে।
ফলিক অ্যাসিড: দৈনিক চাহিদা ১৫০ মাইক্রোগ্রাম, স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০ মাইক্রোগ্রামের বেশি। কারণ শিশুর দেহে অতিরিক্ত উৎপাদন এবং মাতৃদুগ্ধে এর উপস্থিতি।
ভিটামিন বি12: দৈনিক চাহিদ। ১.৫ মাইক্রোগ্রাম, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ০.৫ ১২ মাইক্রোগ্রামের অধিক। কারণ মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে দৈনিক ০.২৫ – ০.৩ মাইক্রাগ্রাম বি12 ক্ষরিত হয়।
স্তন্যদায়ী মায়ের অল্পমূল্যের স্থানীয় সহজলভ্য খাদ্য থেকে প্রস্তুত খাদ্য তালিকা
- মিশ্র দানাশস্য দিতে হবে। যেমন—গম, চাল ইত্যাদি।
- সবুজ শাকসবজি দিনে অন্তত একবার।
- ডাল সারাদিনে দুবার। অঙ্কুরিত ছােলা এবং মুগ ভালাে, চিনাবাদাম এবং সমজাতীয় খাদ্যও. উপযােগী।
- ফল হিসাবে স্থানীয় সহজলভ্য ফল, যেমন—পেয়ারা, আম, কলা, পেঁপে, আমলকি ইত্যাদি অন্ততপক্ষে একটি খেতে হবে।
- দৈনিক ৫০০ মিলি দুধ ও একটি ডিম খেতে দিতে হবে। ডিম, মাছ এবং মাংস অপেক্ষা সস্তা এবং উন্নত গুণসম্পন্ন হওয়ায় দিনে একটি অথবা একদিন অন্তর একটি খাওয়াতে হবে।
খাদ্য ব্যতীত অন্যান্য করণীয় বিষয়গুলি নিম্নরূপ —
- যেহেতু ক্ষরিত দুগ্ধের পরিমাণ ৭০০ মিলি তাই পর্যাপ্ত ভাল গ্রহণ সুনিশ্চিত করতে দৈনিক অন্তত ৩-৪ গ্লাস জল অতিরিক্ত হিসাবে খেতে হবে।
- অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খেলে পরিপাকের গােলমাল ঘটাতে পারে এবং মাতৃদুদ্ধকে গন্ধযুক্ত করতে পারে যা গ্রহণে শিশু অনাগ্রহী হয়ে পড়ে।
- ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তা না হলে মায়ের থেকে শিশুর দেহে রােগ জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে।
মাঝারি পরিশ্রমী স্তন্যদাত্রী মায়ের অল্পমূল্যের খাদ্য তালিকা
খাদ্যের নাম | পরিমাণ (গ্রাম) |
ডাল | ৮০ |
দানাশস্য | ৪৫০ |
সবুজ শাকসবজি | ১৫০ |
মূল ও কন্দ | ৭৫ |
অন্যান্য সবজি | ৭৫ |
ফল | ৩০ |
দুধ | ১২৫ |
তেল ও ঘি | ৪৫ |
মাছ ও মাংস | ৫০ |
ডিম | ২৫ |
চিনি ও গুড় |
এটিও পড়ুন – রােগ নির্ণয় করতে হলে রােগীর এই তথ্যগুলি জানা জরুরী
ট্যাগঃ স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টির, জেনে নিন স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টির, ডাউনলোড স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টির,স্তন্যদায়ী মায়ের পুষ্টির তালিকা