রােগ নির্ণয় করতে হলে রােগীর এই তথ্যগুলি জানা জরুরী

রােগ নির্ণয় করতেঃ হটাৎ কারো শরীর খারাপ কিংবা দীর্ঘদিন ধরে শরীর খারাপ হলে, কি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তার নমুনা বা রােগ নির্ণয় করতে হলে রােগীর নিম্নলিখিত পরীক্ষসমূহ অবশ্যই করা উচিত।
রােগ নির্ণয় করতে হলে রােগীর এই তথ্যগুলি জানা জরুরী
গাত্র তাপ: থার্মোমিটার দ্বারা গাত্র তাপ পরীক্ষা করতে হবে। ৯৮.৪° তাপ স্বাভাবিক। ৯৯°- ১০১°তাপ সামান্য জ্বর। ১০১°-১০৩°তাপ অধিক জ্বর। ১০৩° – ১০৫° প্রবল জ্বর, ১০৫°- ১০৭° সাংঘাতিক জ্বর। ১০৭ – ১১০° জ্বর আসন্ন মৃত্যুর লক্ষণ। ম্যালেরিয়া জুরে ১০৪°-১০৫° আশঙ্কাজনক নয়।
নাড়ী: পুরুষদের ডানহাত ও মহিলাদের বামহাতে নাড়ী দেখা উচিত। সুস্থ দেহের নাড়ী কতকটা পূর্ণ, সম্ভব বিশিষ্ট এবং মৃদু। জন্মকাল থেকে ১ বছর পর্যন্ত নাড়ীর স্পন্দন প্রতি মিনিটে ১২০-১৪০ বার। ২ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ৯০-১০৫ বার, ৬ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ৮০-৯০ বার, ১৬ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত ৭০-৭৫ বার। বৃদ্ধ বয়সে ৫০ – ৬৫ বার।
শ্বাসপ্রশ্বাস: এক বছর বয়সে শ্বাস গৃহীত হয় মিনিটে ৩০ বার। দু’বছর বয়সে ২৫ বার। ৩ থেকে ১৪ বছর বয়সে ২১-২৪ বার। ১৫ বছরের উ্ধ্বে ১৮ – ২০ বার। শ্বাসের গতি ধীর এবং সামান্য উষ্ণ হওয়া শুভ লক্ষণ। শীতল বা ঘন শ্বাস গ্রহণ অশুভ।
নাড়ী, শ্বাসপ্রশ্বাস ও তাপের সম্বন্ধ: তাপ ১° বাড়লে নাড়ীর স্পন্দন ১০ বার ও শ্বাসের গতি ২ বার বাড়ে। স্বাভাবিক তাপ ৯৮.৪° হলে নাড়ী স্পন্দন ৭৫ বার এবং শ্বাসের গতি ২০ বার। তাপ ১০০° হলে নাড়ী স্পন্দন ৯১ বার এবং শ্বাসের গতি ২২/২৩ বার।
এটিও পড়ুন – কম বয়সে মেয়েদের স্তন ঝুলে যাওয়ার কারণ, ১০০% সমস্যা ও সমাধান ।
জিহ্বা: সুস্থ শরীরে জিহ্বা থাকে পরিষ্কার এবং সরস। প্রচণ্ড জ্বল বিকারে এবং স্নায়ুর রােগে জিহ্বা শুষ্ক হয়। পেটের গণ্ডগোলে জিহ্বা সাদা লেপাবৃত হয়। পিণ্ডের দোষে জিহ্বা হলদে হয়। পাকস্থলী জনিত প্রচণ্ড জ্বরে জিহ্বা লাল হয়। রক্তচলাচল ব্যাঘাত ঘটলে জিহ্বা নীল বর্ণ হয়। জিহ্বা কালাে হওয়া মৃত্যুর প্রধান লক্ষণ।
মল: শিশুদের দিনে ৪/৫ বার এবং অন্যদের দিনে ২ বার সকাল ও সন্ধ্যায় মন পরিত্যাগ করা উচিত। স্বাভাবিক মল ঈষৎ হলদে, পিত্ত বেশী হলে মলের রংকালাে এবং পিত্ত কম হলে মলের বর্ণ ধূসর হয়। কলেরার মল পান্তাভাতের জল বা চালধােয়া জলের মতাে হয়।
মূত্র: সুস্থ মানুষের ২৪ ঘণ্টায় ৪ থেকে ৫ বার প্রস্রাব হওয়া উচিত। স্বাভাবিক প্রত্রাব ঈষৎ উজ্জ্বল হলদে। সুস্থ অবস্থায় প্রশ্রাবে জ্বালা যন্ত্রণা ও দুর্গন্ধ থাকে না। জান্ডিস রােগে প্রস্রাব হলদে হয়। প্রস্রাব-এর সঙ্গে রক্ত থাকলে চিন্তা ও ভয়ের কারণ আছে।
বেদনা: বেদনা রােগের লক্ষণ মাত্র। বেদনা বেশী হলে জুর হবার সম্ভাবনা থাকে। বেদনা দুপ্রকার। এক প্রকার বেদনায় চাপ দিলে আরাম লাগে। আরেক প্রকার বেদনায় চাপ দিলে ব্যথা বাড়ে। বেদনা হতে ব্যাধির প্রকৃতি ও স্থান জানা যায়।
ঘামঃ ঘাম হওয়া সুস্থ শরীরের লক্ষণ। ঘাম না হওয়া বা অতিরিক্ত ঘাম হওয়া ভালাে নয়। জ্বর অবস্থায় ঘাম হওয়া জ্বর ছাড়ার লক্ষণ। স্বাভাবিক ঘাম বেরনােকে বন্ধ করা উচিত নয়। ঘামের সঙ্গে শরীরের দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়।