ফিনাইল তৈরি করার পদ্ধতি

অনুচ্ছেদ সমূহ
ফিনাইল তৈরি করার পদ্ধতি, জেনে নিন ফিনাইল কি? ফিনাইল তৈরি করার পদ্ধতি, ফিনাইল তৈরি করার পদ্ধতি pdf, জেনে নিন – ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েব সাইট বানিয়ে ফেলুন একমিনিটে #১ ব্লগিং প্লাটফর্ম
ফিনাইল কী?
ফিনাইল হ’ল উচ্চতর আণবিক গুরুত্ব সম্পন্ন ফ্যাটি অ্যাসিডের সােডিয়াম বা পটাসিয়াম লবনের সঙ্গে ক্রিয়ােজেট তেল ও কার্বলিক অ্যাসিডের মিশ্রণ, বা জীবানুনাশক। | প্রকৃতপক্ষে ফিনাইল হ’ল সাবান এর সঙ্গে ক্রিয়ােজেট তেলও কার্বলিক অ্যাসিডের মিশ্রণ। আমরা সাবান তৈরীর প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি পূর্বে বিস্তারিত আলােচনা করেছি। তাই ফিনাইল তৈরি এখন অপেক্ষাকৃত সহজবোধ্য হবে।।
সাবানের সঙ্গে ফিনাইলের মূল পার্থক্য হল এটি তরল এবং তীব্র গন্ধযুক্ত। এটি জলের সঙ্গে মিশিয়ে অথাৎ লঘু করে ব্যবহৃত হয়। সাবান যেমন পরিষ্ককার করার কাজে লাগে, ফিনাইল লাগে জীবাণুনাশক হিসাবে।
ফিনাইল এর প্রকারভেদ
ফিনাইল সাধারণত দুই প্রকার। যথা-(১) সাদা ফিনাইল, (২) কালো ফিনাইল। সাদা ফিনাইল সুগন্ধযুক্ত হয়। এতে সাধারণত ক্রিয়ােজেট তেলের পরিবর্তে কোন তেল ব্যবহৃত হয়। সুগন্ধদ্রব্য যোগ করা হয়।
কালো ফিনাইল দেখতে কালো বর্ণের, কিন্তু লঘু করার সময় জলে যােগ করলে তা সাদা দ্রবণ তৈরী করে। | এছাড়া সলিড ফিনাইল তৈরি করা যায়। এটি তৈরীতে জল মেশাতেহয়না।এর কার্যকারিতা ফিনাইলের মতই। এটি ব্যবহারের সময় জলে মেশাতে খানিক বেশি সময় লাগে।
ফিনাইল প্রস্তুতির কাঁচামাল
মোটামুটিভাবে সাবান তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সবই ফিনাইল তৈরিতে প্রয়োজন হয়। কেবলমাত্র ফিলার হিসেবে সোডিয়াম সিলিকেট, সুগন্ধদ্রব্য ও রঙ লাগে না। অতিরিক্ত হিসেবে লাগে ক্রিয়োজোট তেল ও কার্বলিক অ্যাসিড। তাই আমরা এই দুটি দ্রব্য সম্বন্ধে একটু বিশদভাবে জানার চেষ্টা করব।
ক্রিয়োজোট তেল
কয়লার অন্তর্ধূম পাতন এর ফলে আলকাতরা নামক একটি উদ্বায়ী তরল পাওয়া যায়। একে ২৫০°-২৮০° সেন্টিগ্রেড উয়তায় উত্তপ্ত করলে যে বেশি ঘনত্বের তেল পাওয়া যায়, তাই হ’ল ক্রিয়ােজেট তেল।
এই ক্রিয়োজোট তেলের জীবাণুনাশক গুণের জন্য ফিনাইল তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। তবে এটিকে কোনাে মিশ্রণে ঠাণ্ডা অবস্থায় যােগ করা উচিত।
কার্বলিক অ্যাসিডঃ
হাইড্রক্সিল মূলকযুক্ত বেঞ্জিন রিঙ আছে এমন অ্যারােমেটিক জৈব যৌগ রসায়নে ফেনল নামে পরিচিত। এর অন্য নাম কার্বলিক অ্যাসিড।
এটির জীবাণুনাশক গুণ রয়েছে। এটি সাধারণতঃ তরল অবস্থায় পাওয়া যায়। এর গলনাঙ্ক কম। এটি জল অপেক্ষা জৈব দ্রাবক যেমন- ইথার, অ্যালকোহলে অধিক দ্রবণীয়। ফিনাইল তৈরীতে প্রয়োজনীয় কার্বলিক অ্যাসিড বাজারে কেলাসিত কঠিন অবস্থায় কিনতে পাওয়া যায়।
ফিনাইল প্রস্তুতিতে প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতি
(১) উনুন, (২) লােহার কড়াই, (৩) লোহার খুন্তি, (৪) বালতি, (৫) গ, (৬) ব্যুমে হাইড্রোমিটার, (৭) থার্মােমিটার, (৮) তুলা যন্ত্র ও বাটখারা, (৯) মাপনী চোঙ, (১) লেবেল আঁটা শিশি বা বােতল।
ফিনাইলের একটি আদর্শ উপকরণ তালিকাঃ
(১) রেডীর তেল – ৫০০ গ্রাম, করৈীঞ্জে (২)রজন- ৫০০ গ্রাম, (৩) ক্ষার দ্রবণ (কস্টিক সােড)-২৮০ ব্যুমে ঘনত্বের ৫০০
গ্রাম, (৪) ক্ৰিয়ােজেট তেল – ১,০০০ গ্রাম, (৫) কার্বলিক অ্যাসিড-১০০ গ্রাম, (৬) প্রেত জল-৩,৫০০ গ্রাম, (৭) পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট – ৫০ গ্রাম।
ফিনাইল প্রস্তুতির পদ্ধতি
প্রথমে উনুনে কড়াই চালিয়ে তাতে রেড়ির তেল পুরােটা করত ঢেলে গরম করতে হবে। বেশ খানিকক্ষণ ফোটার পর তেল পাতলা হয়ে আসবে। । তারপর আস্তে আস্তে রজন মেশাতে হবে এবং খুন্তির সাহায্যে নাড়াতে হবে। রজন
সম্পূর্ণভাবে মিশে গেছে ক্ষার দ্রবণ ও কস্টিক সোডার দ্রবণ এক মিনিট অন্তর একটু করে যোগ করে ভালোভাবে নাড়াতে হবে (সাবান তৈরি অধ্যায় পূর্বে কস্টিক দ্রবণ প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তৃত আলােচনা হয়েছে)। সমস্ত কষ্টিক দ্রবণ ভালােভাবে মিশ্রিত হয়ে গেলে আরও ১৫ মিনিট ভালো করে ফুটিয়ে মিশ্রণটিকে উনুন থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করতে দিতে হবে। এখানে কড়াইয়ের ওপরে জমে থাকা বুদবুদ বা ফেনাগুলি বের করে ফেলতে হবে, ঠান্ডা হতে থাকলে তা কমে যাবে। কিভাবে প্রস্তুত সাবান দ্রবণটিতে (আমরা সাবান বলতে পারি এই কারণে যেহেতু স্যাপোনিফিকেশন বিক্রিয়ায় একটি তৈরী হয়) ১.৫ কিগ্রা, মত (অথাৎ মােট জলের অর্ধেকের সামান্য কম) জল ঢেলে দিতে হবে। এই মিশ্রণটিকে আবার গরম করে (৫-১০ মিনিট মত) উনন থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করতে দিতে হবে।
এরপর অন্য একটি কড়াই উনুনে চাপিয়ে ক্রিয়ােজেট তেল ঢেলে গরম করতে টি হবে। গরম তেলে বাকি ২ কিগ্রা, জল আস্তে আস্তে ঢেলে ৩০-৩৫ মিনিট ভালােভা ফোটাতে হবে। যেন মিশ্রণটি থেকে ন্যাপথলিনের মত ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোবে, তখন উনুন থেকে নামাতে হবে। লক্ষ্য করতে হবে মিশ্রণের রং হবে নীলচে বেগুনী।।
দ্বিতীয় মিশ্রণটি (ক্রিয়োজোট তেলের) মোটামুটি ঠান্ডা হয়ে এলে (তাপমাত্রা হলো। উচিত ৫০-৫৫° সেন্টিগ্রেড) তা আগে প্রস্তুত দ্রবণে (সাবান দ্রবণ) ঢেলে ভালােভাবে। কাঠের তাড়ুর সাহায্যে মেশাতে হবে। মিশ্রণটি ২-৩ ঘন্টা পরে সম্পূর্ণ ঠান্ডা হবে | গেলে তাতে ১০০ গ্রাম কার্বলিক মেশাতে হবে। এইখানে দ্বিতীয় মিশ্রণ তৈরীর পর | বাঝালাে গন্ধ না বেরােয়, তাহলে ৫০ গ্রাম পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মেশানো।
জেনে নিন – পর্যায় সারণী মনে রাখার সহজ কৌশল, Best Latest Tips