নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস …. ভাবস্প্রসারন

নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ….কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে ভাবস্প্রসারনটি শেয়ার করা হল। এর আগের পোষ্টে ভারতরত্ন অটল বিহারী বাজপেয়ী সংক্ষিপ্ত জীবন শেয়ার করা হয়েছিল চাইলে দেখে নিতে পারেন। নিম্নে মূলকথার ভাব বিস্তার করা হল।
নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস
ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।
নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে
কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে ।
ভাবসম্প্রসারণঃ
মানুষ সর্বদা নিজের অবস্থার উন্নতি ও পরিবর্তন চায়। নিজের অবস্থাতে সন্তুষ্ট থাকা মানুষের স্বভাববিরুদ্ধ। নিজের সুখের চেয়ে অন্যের সুখ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হচ্ছে মনে করে মানুষ মনে মনে অতৃপ্ত হয়। এই অতৃপ্তির ভালাে-মন্দ দুটি দিক আছে। একজন বিশেষ মানুষ তার প্রতিবেশী বা দূরবর্তী কোন ব্যক্তি বা গােষ্ঠীর উন্নতি দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে তার ক্ষতিসাধনে তৎপর হয়। অপরপক্ষে এমন মানুষও দেখা যায়, যে পরের উন্নতি দেখে নিজেকে আরাে উন্নত করার প্রয়াসে রত হয়। এই প্রয়াস এবং প্রযত্নের দ্বারা মানুষ তার ভাগ্য পরিবর্তন করে। এর সাহায্যেই যুগে যুগে সভ্যতারও ঘটে অগ্রগতি। কিন্তু অন্যের সৌভাগ্যের কল্পনায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকলে কখনাে কোন মানুষ নিজ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয় না। অন্যের সুখ আছে, অন্যের ভাগ্য আমার চেয়ে অনেক ভালাে, এ কথা ভাবতে ভাবতে ঈর্ষায় জর্জরিত হয়ে বসে থাকলে ভাগ্যদেবী সমস্ত সুখ-সম্পদের ডালি নিয়ে সামনে উপস্থিত হবেন না। ভাগ্যদেবীর প্রসাদ লাভ করতে হলে নিজেকে উদ্যোগী হতে হবে। নিজের অবস্থায় অতৃপ্ত থাকা জীবনের লক্ষণ। কিন্তু সেই অতৃপ্তি যদি অন্যের প্রতি অসূয়ার জন্মদান করে, তবে তা বিকৃতির নামান্তর। অতৃপ্তিজাত কর্মপ্রয়াসই মানুষের উন্নতির মূল। নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থেকে শুধু নিজের অদৃষ্টকে ধিক্কার জানালে কখনােই মনের শান্তি, প্রাণের আরাম, জীবনের অভ্যুদয় ঘটতে পারে না।
এটিও পড়ুন – 10+ গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ