পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা 600 শব্দের মধ্যে
![](https://agomonibarta.com/wp-content/uploads/2020/02/railways.jpg)
পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনাঃ এই পোষ্টে সকল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা শেয়ার করা হল। একটি নদীর আত্মকথা প্রবন্ধ রচনা এর আগের পোষ্টে আলোচনা করা হয়েছিল চাইলে দেখে নিত পারো। পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা অনুরূপ প্রবন্ধ আর কি কি লেখা যাবে তা হল – পরিবেশ দূষণের প্রতিক্রিয়া ; সভ্যতার অগ্রগতি ও পরিবেশ দূষণ ; পরিবেশ দূষণ প্রতিকারে ভারত।
পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার
[ প্রসঙ্গ সূত্রঃ ভূমিকা; জল দূষণ ; স্থল দূষণ ; অন্তরীক্ষ দূষণ ; শব্দ দূষণ ; দুষণ মুক্তির উপসংহার।]“যাহারা তােমার, বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলাে,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভূমিকা
পরিবেশ শব্দ ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত। জল স্থল-অন্তরীক্ষ ব্যাপী জৈব-অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে যে বিশাল আয়তন মানুষকে পরিবেষ্টিত করে আছে তাই পরিবেশ। বিজ্ঞানীর অনন্ত কৌতুহল নিবৃত্তির জন্য নির্বিশেষে সব বস্তুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রাকৃতিক সম্পদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ এবং অহবহ মানুষের অবাঞ্ছিত কাজের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে মানুষের ভবিষ্যৎ ভয়াবহ-মারাত্মক, তাদের জীবনযাপন হবে অনিশ্চিত। তাই চিন্তাশীল মানুষের ভাবনা—পৃথিবী দূষণের সর্বনাশের পথ অচিরে ত্যাগ না করলে মানুষ আর এক শতকের বেশি বাঁচবে না। এই ভয়াবহ পরিণতির কথা ভেবে মানুষ পরিবেশ দূষণের কারণ ও তার প্রতিকারের উপায়ের কথা ভাবতে শুরু করেছে। রাষ্ট্রসংঘ কর্তৃক ঘােষিত ১৯৭২ সালের ৫ই জুন পরিবেশ দিবসে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন দেশ দূষিত পরিবেশ মুক্ত হয়ে যাতে বসবাস করতে পারে সে বিষয়ে সচেতন হয়েছে।
জল দূষণ
জীবন ধারণের প্রধান উপায় জল। সেই জীবনদায়ী জল আজ দুষিত। কলকারখানার রাসায়নিক পদার্থ, ভাসমান জাহাজ-নির্গত বর্জ্যদ্রব্য, পচা দ্রব্য জলে মিশে তা আজ বিষাক্ত, অপেয়। গবাদি পশুর মলমূত্র, গৃহস্থালীর নােংরা জলে মিশে পচন ক্রিয়ায় জীবননাশক বহু জীবাণুর বংশ বৃদ্ধি করছে। অব্যবহার্য মারণাস্ত্র মহাসাগরে ফেলে দিয়ে বহু দেশ বিশাল জলধি দূষিত করেছে।
স্থল দূষণ
নানাভাবে স্থল দূষিত হয়। হাটে-বাজারে যে পরিমাণ নােংরা সঞ্চিত হয় তা ভাবনার বিষয়। থুথু, কফ, পশুপক্ষীর মৃতদেহ আবর্জনার পরিমাণ বৃদ্ধি করে। অত্যধিক খনিজ দ্রব্য উত্তোলনে পৃথিবী ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। ইটগুড়াে কৃষিক্ষেত্রে পড়ে সুফলনের অন্তরায় সৃষ্টি করে। উনুন, ইঞ্জিন তাপমাত্রা বাড়িয়ে চলেছে। মাটির নিচে পরমাণু বিস্ফোরণের ফলে মাটি হয়েছে বিষাক্ত। বনভূমি নিষ্পাদপ লৌহনগরীতে রূপান্তরিত হচ্ছে। ফলে মাটির ক্ষয়রােধ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, বৃষ্টিপাতের তারতম্য ঘটাচ্ছে। উপগ্রহ নিক্ষেপিত আবর্জনা অস্বাস্থ্যকর ও ভয়ঙ্কর।
অন্তরীক্ষ দূষণ
যন্ত্রযুগে শহরের চলমান গাড়ি থেকে সবসময় বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে। কলের কালাে ধােয়ায় আকাশ ভরে যাচ্ছে। রেয়নের প্রয়ােগে অসতর্কতায় মৃত্যুবীজ ছড়িয়ে পড়ছে, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ভাসমান অসংখ্য ধূলিকণার পরিমাণ বেড়েছে। জেটপ্লেন থেকে উদ্ভূত গ্যাস ওজোন (03) গ্যাসের স্তর হালকা করেছে। মােটরের কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রেট ও হাইড্রোকার্বন নিরন্তর আবহাওয়ামণ্ডল দূষিত চলেছে।
শব্দ দূষণ
রেডিও, মাইক, লাউডস্পিকার প্রভৃতির উচ্চ শব্দ আমাদের শ্রবণশক্তিকে বিপর্যস্ত করে। যন্ত্রযানের উৎকট হর্ণ, পটকা, আতসবাজীর পিলে চমকানাে আকস্মিক আওয়াজ, কলকারখানার সিটি ও রাক্ষুসে গর্জন নিয়ত আমাদের হৃৎপিণ্ডে আঘাত হানছে, স্নায়ুতন্ত্রের চাপের সৃষ্টি করে চলেছে। এর ফলশ্রুতিতে মানুষের অবসন্নতা, মাথাব্যথা, রক্তচাপ বৃদ্ধি পাবে, মানুষ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।
রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারত সরকার প্রধানমন্ত্রীর অধীনে পরিবেশ দূষণ প্রতিকার বিভাগ সৃষ্টি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রীর দপ্তর সৃষ্টি হয়েছে। খােলা জায়গায় কলকারখানা খুব একটা ক্ষতিকারক নয়, তাই দূষিত গ্যাস নিঃসরণকারী শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরিবেশ দপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে শিল্পনগরী স্থাপন করতে হচ্ছে। বনভূমি সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা করেই বনজ শিল্প প্রতিষ্ঠা
দূষণ মুক্তির উপায় ও উপসংহার
দূষণ রোধে আইন-কানুন ইতােমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। এই আইন-কানুন মানা ও স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে পরিবেশ দূষণ মুক্তির সহায়তায় জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। আবহাওয়া বিশুদ্ধীকরণের জন্য চাই মানুষের আনুপাতিক অরণ্য সৃষ্টিতে মনােযােগী হওয়া। যথেচ্ছ কয়লা ব্যবহার কমিয়ে বায়ুমণ্ডলের দূষণ প্রতিরােধ আশু প্রয়ােজন। কার্বন মনােক্সাইডের হাত থেকে বাচার জন্য পুরাতন গাড়িগুলি অবিলম্বে বাতিল করা দরকার। বৈজ্ঞানিক উপায়ে যানবাহনের আওয়াজ কমানাে উচিত। বৈজ্ঞানিক উপায়ে নির্গম-নলে স্মােক অ্যারেস্টার যন্ত্র বসিয়ে এক নতুন গাড়ির প্রচলন করে বিষাক্ত গ্যাস নির্গম নিয়ন্ত্রণে এসেছে। রেয়নের দূষিত জল চুন দ্বারা শুদ্ধি সম্ভব। কলকারখানার চিমনিজাত গ্যাস বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ দরকার। একটু সতর্ক হলেই আমরা রাস্তাঘাট আবর্জনামুক্ত রাখতে পারি। নাগরিক স্বাস্থ্য, পয়ঃপ্রণালী ও সিউয়েজ ব্যবস্থার বৈজ্ঞানিক উপায়ে উন্নতি করতে হবে। বায়ুমণ্ডলে রকেট নিক্ষেপণ ও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ নিষিদ্ধ হওয়া দরকার।
ট্যাগঃ পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার ইংরেজি রচনা, পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনা 600 শব্দের মধ্যে PDF, পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা।