প্রবন্ধ রচনাNewsপড়াশোনা

বাংলার পল্লি সমাজ সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা -#1 Palli Samaj

এই পষ্টে বাংলার পল্লি সমাজ সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা -#1 Palli Samaj, বাংলার পল্লি সমাজ সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা, বাংলার পল্লি সমাজ সম্পর্কে অনুচ্ছেদ, বাংলার সমাজ প্রবন্ধ রচনা , পল্লী সমাজ সারাংশ, পল্লী সমাজ উপন্যাস pdf, পল্লী সমাজ উপন্যাসের সারাংশ, পল্লী সমাজ pdf download, পল্লী সমাজ এর নায়িকা, পল্লী সমাজ এর নায়ক, পল্লীসমাজ উপন্যাসের সারাংশ, পল্লীসমাজ সারাংশ শেয়ার করা হল। এটিও পড়ুন- শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায় সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা

বাংলার পল্লি সমাজ সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা

ভুমিকাঃ

শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সমগ্র ভারত গ্রামীণ সভ্যতার উপর দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিম বাংলার আশি থেকে নব্বই শতাংশ গ্রাম। এই গ্রাম বাংলার পারিপার্শিকতা, গ্রামীণ মানুষের ইচ্ছা – অনিচ্ছা, কামনা -বাসনা, ধর্মীয় বিশ্বাস ও রুচির উপর সমগ্র বাংলার কৃষ্টি গড়ে উঠেছে। জনগনের কর্ম ক্ষমতার উপর অর্থ নৈতিক বুনিয়াদ নির্ভরশীল। বাংলার সাহিত্য- সংস্কৃতি সুজলা- সুফলা পল্লি বাংলার প্রতিবিম্ব ছাড়া আর কিছু নয়।

বাংলার প্রাকৃতিক সুন্দরতাঃ

নদী মাতৃক আমাদের এই পশ্চিম বাংলা। গঙ্গা, ভাগীরথী, অজয়, রুপনারায়ন, কংসাবতি, দামোদর প্রভৃতি নদনদী পশ্চিমবঙ্গকে সরস ও উর্বর করেছে। বাংলার প্রসারিত মাঠ, জল ভরা দিঘি, আঁকা বাঁকা মেঠো পথ, শ্যামল গাছ গাছালি পরিবৃত ও শান্তি-বিজড়িত কুটির বাঙ্গালির প্রানের ধন। আমবাগান, বুড়ো বটতলা, পুরাতন শিব মন্দির, সার্বজনিন দুর্গা মন্ডপ, হাট বাজার প্রভৃতি গ্রামীণ মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এই গ্রাম বাংলার অনিন্দ্যসুন্দর রুপ বিশ্ব কবির ভাষায় ব্যক্ত হয়েছে-
অবারিত মাঠ, গগন ললাট চুমে তব পদধূলি–
ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় ছোটো ছোটো গ্রাম গুলি।
পল্লবঘন আম্রাকানন রাখালের খেলা গেহ–
স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল, নিশীথ শীতল স্নেহ।

প্রাচীন ঐতিহ্যঃ

একদা গ্রাম বাংলার মানুষ ঐশ্বর্জ সম্পদে সমৃদ্ধ ছিল। তাদের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের সীমা ছিল না। তখন গ্রাম ছিল উৎসব মুখর। পালা পার্বনে আনন্দের কোলাহল পড়ে যেত। আগে একটা গ্রাম ছিল যেন একটা পরিবার। মোড়ল মাতব্বরের নির্দেশ মতো সবাইকে চলতে হত। একের বিপদে অপরে ঝাপিয়ে পড়ত। বর্ণবৈষম্য থাকলেও তা জীবন যাত্রায় অন্তরায়ের সৃষ্টি করে নি, বরং একে অপরে উপর নির্ভর করে সুশৃঙ্খল ভাবে জীবন নির্বাহ করেছে। গ্রামীর লোকজন একে অপরের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করলেও পরক্ষনে তারা তা মিটিয়ে নিয়েছে। আবাদ করে বিবাদ করে সুবাদ করে তারা।’

অবস্থার রুপান্তরঃ

ধীরে ধীরে কৃষিসভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে গ্রামে যন্ত্রসভ্যতা প্রবেশ করেছে। গ্রাম ছেরে অন্নের সন্ধানে মানুষ শহর মুখী হয়েছে। শ্যামল কোমল বাংলার বুকে কলকারখানা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। চিমনির ধোঁয়া গ্রামের পরিবেশকে দূষিত করে তুলছে। সহজ সরল গ্রামীণ মানুষ যন্ত্রের প্রভাবে যান্ত্রিক হয়ে পরেছে। তাদের মধ্যে স্বার্থ নিয়ে সংঘাত ও দলাদলি শুরু হয়েছে। চারদিকে একটা সন্দেহ, অবিশ্বাস ও শংসয়ের আবহাওয়া ছরিয়ে পরেছে। দারিদ্র্য আজ জনগনের নিত্যসঙ্গী। অর্ধাহারে ও অনাহারে কোন প্রকারে তারা দিনযাপন করছে।

সাম্প্রতিক অবস্থাঃ

অন্তঃসারশুন্য গ্রাম বাংলার পুন্রুদ্ধারের জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার নজর দিয়েছেন। বিভিন্ন গ্রামোন্নয়ন কর্মসুচি নেওয়া হয়েছে। গ্রামের রাস্তা ঘাট ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। সুদুর গ্রামে নিয়ন বাতি উজ্জ্বল আলোক বিতরণ করেছে। স্কুল কলেজ গ্রামে গ্রামে ছরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য আর অবহেলিত নত- গ্রামে গ্রামে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে। ভুমি বণ্টনের ফলে সাধারন মানুষের হাতে জমি এসেছে। নিজের জমিতে তারা প্রাণপণে ফসল বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে। কৃষির উন্নতির জন্য সরকারি ঋণদানের ব্যবস্থা হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রসার ঘটানো হয়েছে।

উপসংহারঃ

গ্রামে বর্তমানে সুযোগ সুবিধা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য। পল্লিকে শহরের সুযোগ দিতে হবে। এখনো শহরের ডাক্তার গ্রামে যেতে চান না, অধ্যাপক গ্রামের কলেজে অধ্যাপনা করতে নারাজ হন। তাদের এই মানসিকতা পরিবর্তন দরকার। পল্লির উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নতি হতে পারে না।

ফেসবুকে উপডেট পেটে চোখ রাখুন আগমনী বার্তা ফেসবুক পেজ।

এগুলিও পড়তে পারেন -

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button