প্রবন্ধ রচনা

উন্নয়ন বনাম পরিবেশ প্রবন্ধ রচনা 600 শব্দের মধ্যে

উন্নয়ন বনাম পরিবেশ সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা

উন্নয়ন বনাম পরিবেশঃ উন্নয়ন বনাম পরিবেশ সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা সুপ্রিয় ছত্র ছত্রিদের জন্য শেয়ার কার হল। আশা করি সকল চ হাত্র ছাত্রীদের উন্নয়ন বনাম পরিবেশ এই প্রবন্ধ রচনাটি কাজে আসবে মাদার টেরেসা 600 শব্দের মধ্যে প্রবন্ধ রচনা এর আগের পোষ্টে শেয়ার কারা হয়েছিল চাইলে দেখে নিতে পারো।

উন্নয়ন বনাম পরিবেশ

রচনা-সংকেত : ভূমিকা-বিশ্বমানস উদবিগ-পরিবেশদূষণের কার- —তাপবৃ—িতাপবুদ্ধির প্রভাব—ওজোনস্তরে ছিদ্র—উপসংহার।

ভূমিকা

শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, সুখে-সম্পদে সভ্যতাধন্য মানবসমাজের বিকাশ ও সমুন্নতির আর এক না হল উন্নয়ন। মানবসভ্যতার এই উন্নয়ন ও অগ্রগতির রথ সতত চলমান, এই যুগ যান্ত্রিক যুগ। প্রযুক্তিবিজ্ঞানে সমুন্নতির যুগ। মানুষের জীবনযাত্রার প্রতি পদক্ষেপে বিজ্ঞানের অবদান। প্রযুক্তিবিজ্ঞানের সার্থক প্রয়ােগ। সভ্যত এই উন্নত শীর্ষ থেকে মানুষ আর কোনােদিনই তাঁর অতীত আরণ্যক জীবনে ফি যেতে পারবে না। অথচ আজ পৃথিবীর দূষিত পরিবেশের যে দুরবস্থা, তাতে কবিগু বিখ্যাত উক্তি : ‘দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর,লও যত লৌহ লােষ্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর / হে নব সভ্যত স্বীকার করতে দ্বিধা নেই বিজ্ঞানের কৃপাধন্য মানবসভ্যতার এই আকাশচুম্বী উন্নয়নই পৃথিবীর দূষণজ্জর পরিবেশের জন্য দায়ী।

পাট চাষ

বিশ্বমানস উদ্‌বিগ্ন

আমাদের পালয়িত্রী বসুন্ধরা ভালো নেই। দূষণভারে জর্জরিত। ক্রমশ এগােচ্ছে অসুস্থতার দিকে। কল্যা=ে বিশ্ব জনমানস তাই উদবিগ্ন, চিন্তাকুল। রব উঠেছে ‘বসুন্ধরা বাঁচাও। সুস্থ পৃথিবীর ও দূষণমুক্ত পরিবেশে আগামী প্রজন্মকে বেঁচেবর্তে থাকার সুযােগটুকু করে দাও। যেন কবি সুকান্তের শপথ বাক্য ‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযােগ্য করে যাব আমি-নবজাতকের কাছে এ আমর দৃঢ় অঙ্গীকার।

পরিবেশ দূষণের কারণ

অসুস্থ বিশ্বপরিবেশের জন্য মানবসভাতার উন্নয়নকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানাে হলে ও প্রকৃতপ অবিবেচক মানুষের অপরিণামদর্শী কার্যকলাপ সেজন্য দায়ী। শিল্পায়ন ও নগরায়ণের তাগিদে নতুন নতুন জনপদ গড়ে ওঠার প্রয়ােজনে নির্বিচারে অরণ্য উচ্ছেদের কাজে মানুষের হাতে উঠেছে পরশুরামের কুঠা অরণ্যের বিস্তার কমতে কমতে পৃথিবীর মােট ভূভাগের পঞ্চাশ শতাংশ জুড়ে থা বনাঞল দাঁড়িয়েছে মাত্র পঁয়ত্রিশ শতাংশে। পরিবেশের ভারসাম্যবিচ্যুতির এটি অন্যত কারণ। তা ছাড়া মানুষের দৈনন্দিন কাজে, কলকারখানায়, যানবাহনে প্রতিদিন পুড়ছে তেল, কয়লা, জ্বালা কাঠ, তার ফলে ভূ-পরিমণ্ডলে বাড়ছে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ। বিজ্ঞানীদের অভিমত, ইতিমধ্যে হাজার কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড জমেছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে।

তাপবৃদ্ধি

পৃথিবীর আবহাওয়ামণ্ডলের তাপ বাড়ছে, তারও প্রধান কারণ কার্বন ডাইঅক্সাইড। আর দায়ী ক্লোরােফ্লুরাে কার্বন বা এফ সি জাতীয় গ্যাস। জলাভূমিতে জাত মিথেন গ্যাসও পৃথিবীর তাপবৃদ্ধির অন্যত কারণ। তা ছাড়া এ ব্যাপারে নাইট্রাস অক্সাইড বা গ্রিন হাউস গ্যাসের কথাও বলেছেন বিজ্ঞানীরা। ১৮৮ খ্রিস্টাব্দের তুলনায় একশাে বছর পরে ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর তাপ বেড়েছে ০.৬ ডিগ্রিসে। সে জায়গ সবচেয়ে লক্ষণীয়, গত এক দশকে তাপবৃন্ধির পরিমাণ গড়ে ০.৭ ডিগ্রিসে। তা ছাড়া জলদূষণ, শব্দদুষন আলােকদূষণ তাে আছেই। আর আছে অস্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি—বছরে ৯ কোটি ২০ লক্ষ জন।

তাপবৃদ্ধির প্রভাব

উন্নয়নের সর্বব্যাপী চাপে সর্বংসহা ধরিত্রী আজ সহনশীলতার শেষ প্রান্তে। প্রতিরােধ ক্ষমতার শেষ বিন্দুটি উজাড় করেও তার কোটি কোটি সন্তানের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারবে কিনা সে সন্দে সংশয়ের ছায়া পড়েছে তার ললাটের দীর্ঘ বলিরেখায়। কারণ তার দ্রুত বেড়ে-চলা তাপমাত্রা তাকে বড়াে বেশি অসুস্থ করে ফেলেছে। এভাবে তাপবৃদ্ধি মেরু অ্যলে জমে-থাকা বরফ গলিয়ে সমুদ্রে প্লাবন আনবে। পৃথিবীর অপেক্ষাকৃত নীচু ভূভাগ প্লাবিত হবে। আবহাওয়াতেও পড়বে উষু পৃথিবীর প্রভাব। বিস্তীর্ণ অঞ্চল খরায় পুড়বে। তপ্ত বসুন্ধরার বুক থেকে মুছে যাবে উদ্ভিদ ও প্রাণের অস্তিত্ব।

ওজোনস্তরে ছিদ্র

সবচেয়ে যে বিপদের সংকেত কল্যাণকামী মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে, তা হল বিভিন্ন বিষান্ত গ্যাসের সংযােজনে বায়ুদূষণের ফলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে ছাতার মতাে প্রসারিত ওজোনস্তরে ছিদ্র দেখা দিয়েছে। সুর্যের প্রাণঘাতী অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রা ভায়ােলেট রে থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করছে ওজোনস্তর। এই স্তরের ঘনত্ব কমে যাওয়া বা ছিদ্রে ভরে যাওয়ার অর্থ অতিবেগুনি রশ্মির আঘাতে পৃথিবীর ধ্বংসকে ত্বরান্বিত করা। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে চোখের দৃষ্টি নষ্ট হবে, ত্বকে ক্যানসার ছড়াবে, রােগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমবে, গাছের সালােকসংশ্লেষের শক্তি হ্রাস পাবে, কমবে। শস্য ও মাছের উৎপাদন।

উপসংহার

কিন্তু সভ্যতার উন্নয়ন তাে স্তন্ধ হতে পারে না। উন্নয়নকে অব্যাহত রেখে পরিবেশকে সুস্থ ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখার উপায়াদির কথা ভাবতে হবে। কলকারখানা গড়ে উঠবে, শিল্পের আরও বিস্তার ঘটবে, কৃষির প্রসার হবে, কৃষিভিত্তিক শিল্পাদি গড়ে উঠবে, প্রযুক্তিবিজ্ঞানের প্রসন্নতায় ও অবদানে নতুন নতুন ইলেকট্রনিকস শিল্পের বিকাশ হবে। সভ্যতার ক্রমােন্নতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের নিত্যনতুন বিলাস-বৈভবের চাহিদাও মেটাতে হবে। তা সত্ত্বেও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা ও সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থাদি গ্রহণ করতে হবে। জল ও বাতাস যাতে দৃষিত না হয়, শব্দের আধিক্য যাতে পীড়নের কারণ না হয়, সে ব্যাপারে সজাগ ও সচেতন হওয়া জরুরি। দেখতে হবে সভ্যতার উন্নয়ন যাতে পরিবেশদুষণের কারণ ও প্রতিপক্ষ হয়ে না দাঁড়ায়, বরং উন্নয়ন হবে পরিবেশকে সুস্থ ও সুন্দর রাখার সহায়ক।

এটিও পড়ুন – সাধারণ নির্বাচনে তরুণ সমাজের ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা

ট্যাগঃ 1000+ ইংরেজি প্রবন্ধ রচনা, উন্নয়ন বনাম পরিবেশ সম্পর্কে ইংরেজি প্রবন্ধ রচনা, ডাউনলোড উন্নয়ন বনাম পরিবেশ সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা

এগুলিও পড়তে পারেন -

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button