প্রবন্ধ রচনা

আমার জীবনের লক্ষ্য রচনা

আমার জীবনের লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া রচনা

আমার জীবনের লক্ষ্য হতে পারে বিভিন্ন কিছু যেমন পেশা, শিক্ষা, পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক কর্তব্য ইত্যাদি। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত এমন একটি কাজ যা আপনার আনন্দ এবং পরিস্কার লক্ষ্য হতে হবে।

যদি আপনি শিক্ষা নির্বাচন করতে চান, তবে আপনি একটি পেশার মাধ্যমে আপনার প্রফেশনাল লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন। একটি উন্নয়নশীল ক্যারিয়ার উদাহরণ যেমন মেডিকেল ফিল্ড বা টেকনোলজি সেক্টর।

আপনি চাইলে আপনার পারিবারিক জীবনের সাথে সম্পর্ক নির্ধারণ করতে পারেন যাতে আপনার সার্থক শিক্ষা প্রফেশনাল ক্যারিয়ারে পাশাপাশি হয়।

আপনি আপনার সামাজিক দায়িত্ব পালন করে আপনার লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন। একটি সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়া এবং দরিদ্রদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করা একটি ভাল উদাহরণ হতে পারে।

আমার জীবনের লক্ষ্য

ভূমিকা :

কোন না কোন একটি লক্ষাকে কেন্দ্র করেই মানবজীবন আবর্তিত হচ্ছে। আমি যখন ভাবতে বসি, আমার জীবনের লক্ষ্য কি, তখন আমার কিশোর মনে নিত্য নতুন আশা দেখা দেয়। যখন নজরুল ও রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীতগুলি আমার মন-প্রাণকে পুলকে আচ্ছন্ন করে তখন মনে হয়, একজন কবির জীবনই “ধন্য; তাই কাব্য সাধনাই আমার জীবনের চরম লক্ষ্য; আবার যখন বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীর বাহাদুরির কথা চিন্তা করি, তখন একজন বিজ্ঞানী হইয়া রহস্য সন্ধানের জন্য মন-প্রাণ ব্যাকুল হইয়া উঠে। আবার একজন দেশপ্রেমিকের অকুন্ঠ আত্মত্যাগ, দেশমাতৃকার সেবায় অকাতরে জীবনোৎসর্গের বিষয় যখন চিন্তা করি তখন স্বদেশের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার জন্য মন-প্রাণ আকুলি-বিকুলি করে। আত্মীয় স্বজনের আর্থিক দুঃখ-দৈন্য দেখতে মন চায়; যে কোন উপায়েই হক অর্থোপার্জন করে তাদের এই নিদারুণ দুঃখ দূর করি। আবার কখনও বা কোন কৃতকর্মা উকিল, ব্যারিস্টার, ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তারের অতুল ঐশ্বর্যের প্রতি চেয়ে এদের যে-কোন একটি বিষয় অবলম্বন করে আমার জীবনও সার্থক করতে ব্যাকুল হয়ে পড়ি। এইভাবে শত সহস্র বাসনা, আমার তরুণ চিত্তকে সর্বদা উদ্ভ্রান্ত করে রাখে। কি যে আমার প্রকৃত বাসনা, তা উদ্ভাবন করতে পাড়লাম না।

এত কিছু ভাবনা-চিন্তা করেও পণ্ডিত-মূর্খ হয়ে রইলাম। মনে পড়ল যে, সমাজে, যে পরীতে আমার জন্ম, সেখানকার মানুষের অবস্থা। বন্যার প্লাবনে তাদের শস্য সম্পদ ভাসিয়ে নিয়ে যায়। রোগে-শোকে ম্যালেরিয়া প্রভৃতিতে তারা জর্জরিত। গ্রামের দুই-চারজন বিত্তশালী ব্যক্তি পদে পদে অর্থের জোরে তাদের ক্ষুধার অন্ন কেড়ে নেয়; অথচ কারও বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস তাদের নেই।

শিক্ষার অভাবে আমার প্রতিবেশীরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন, রাজশক্তি কর্তৃক ঘূর্ণিত, শিক্ষিত সমাজ কর্তৃক অবহেলিত, জগতের সুসভ্য মানব সমাজে নগণ্য। কেবল শিক্ষার অভাবেই তাদের সহিত বাহ্য জীবনের যোগসূত্র প্রতিষ্ঠিত হয় নি; শিক্ষার অভাবেই তারা উন্নত ও সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে পারে নি; শিক্ষার অভাবে তারা মানুষ হিসাবে তাদের মর্যাদা বুঝতে পারে নি।

আমার পরিকল্পনা :

তাদের এই চরম দুর্দশার কথা চিন্তা করে আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম, আমার জীবনের মূলমন্ত্র হবে এই অশিক্ষিত তমসাচ্ছন্ন গ্রাম্য লোকদের মধ্যে শিক্ষার আলোক-শিখা প্রজ্বলিত করে দেওয়া। আমার একক জীবনের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা দ্বারা হয়তো আমি এই বিষয়ে বিরাট রকম সাফল্য দেখতে পাব না; কিন্তু আমার প্রতিটি শিষ্যকে আমারই ব্রতে অনুপ্রাণিত ও দীক্ষিত করে যেতে পারলে আশা আছে, একদিন আমি সমাজের বরণীয় ও স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারব। আমার শিক্ষা ও অনুপ্রেরণায় এই অজ্ঞ ও মূর্খ সমাজ থেকে বহু উকিল, ব্যারিস্টার, ডাক্তার, কবি, সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক ও রাজনীতিবিদ জন্মলাভ করিয়া সমাজের মুখোজ্জ্বল করিতে পারিবে এবং অনুন্নত ও অবহেলিত সমাজকে আরও উন্নত ও গৌরবান্বিত করে তুলতে সমর্থ হবে।

এই সিদ্ধান্তে দৃঢ়সংকল্প হয়ে আমার নিজের গ্রামের জনসাধারণকে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও মর্যাদা সম্বন্ধে বুঝাতে লাগলাম। ধীরে ধীরে আমার চেষ্টা সাফল্যের দিকে অগ্রসর হতে লাগল। আমরা সকলে মিলে গ্রামে একটি অবৈতনিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলাম। এই বিদ্যালয়ে আমি অবৈতনিক প্রধান শিক্ষক হিসাবে কাজ করতে লাগলাম।

আমার এইরূপ পরিকল্পনায় আমার মাতা-পিতা, আত্মীয়-স্বজন, আরও অনেকে অসন্তুষ্ট হলেন। বন্ধুদের কেউ কেউ আমাকে পাগল বলে অভিহিত করল। মাতা-পিতা মনে করলেন, আমি একজন জাঁদরেল প্রকৌশলী হয়ে বেশি পরিমাণ টাকা পয়সা রোজগার করব। আত্মীয়-স্বজনেরা আশা করতেন, আমার বদৌলতে কন্ট্রাক্টারী করে দুই পয়সা করতে পারবেন। বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করত জজ হব, কেউ কেউ মনে করত রাজনৈতিক নেতা হব। কিন্তু ‘তাদের সকল আশাই ব্যর্থ হল।

পরীক্ষায় সাফল্য:

ইতোমধ্যে আমার বি. এ. অনার্স পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হল; আমি প্ৰথম শ্ৰেণী পেয়ে কৃতকার্য হয়েছি। অধ্যাপকদের শুভাশিস্ পেলাম। তারা আমার জন্য রিসার্চ স্কলারশিপের ব্যবস্থা করবেন বলে লিখেছেন। কিন্তু আমি আমার নিজের গ্রামের লোকদের অজ্ঞতা দূরীকরণের রিসার্চ গ্রহণ করলাম।

উপসংহার :

আমার বিগত ১২ বছরের অক্লান্ত সাধনায় সেই ক্ষুদ্র বিদ্যালয়টি এখন একটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। সহস্রাধিক ছাত্র এর দ্বারা অজ্ঞতা দোষ মুক্ত হয়েছে। প্রত্যেক বিদায়ী ছাত্রই আমার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকে যে, ভবিষ্যতে তারা দেশের অজ্ঞতা দূরীকরণে সচেষ্ট হবে। আমার বিশ্বাস, তাদের প্রচেষ্টায় দেশ থেকে অজ্ঞতা দূরীভূত হবে। আমার স্বপ্ন সার্থক হবে।

ট্যাগঃ

আমার জীবনের লক্ষ্য রচনা, আমার জীবনের লক্ষ্য, আমার জীবনের লক্ষ্য পুলিশ রচনা, আমার জীবনের লক্ষ্য ডাক্তার রচনা, আমার জীবনের লক্ষ্য রচনা class 5, আমার জীবনের লক্ষ্য পুলিশ হওয়া, আমার জীবনের লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া রচনা, আমার-জীবনের লক্ষ্য শিক্ষক হওয়া রচনা, আমার-জীবনের লক্ষ্য রচনা class 6, আমার জীবনের লক্ষ্য রচনা class 10, আমার-জীবনের লক্ষ্য রচনা class 7, আমার-জীবনের লক্ষ্য রচনা class 4, আমার-জীবনের লক্ষ্য পুলিশ হওয়া রচনা, আমার-জীবনের লক্ষ্য রচনা class ২, আমার জীবনের লক্ষ্য in english, আমার জীবনের লক্ষ্য রচনা class 3, প্রবন্ধ রচনা আমার-জীবনের লক্ষ্য রচনা, আমার জীবনের লক্ষ্য পাইলট হওয়া, আমার জীবনের লক্ষ্য প্রবন্ধ রচনা, আমার জীবনের লক্ষ্য রচনা ডাক্তার, আমার-জীবনের লক্ষ্য বিজ্ঞানী রচনা, আমার-জীবনের লক্ষ্য রচনা class 8, আমার-জীবনের লক্ষ্য বিজ্ঞানী হওয়া, আমার-জীবনের লক্ষ্য শিক্ষক হওয়া, আমার-জীবনের লক্ষ্য অনুচ্ছেদ রচনা, আমার জীবনের লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ার রচনা, আমার-জীবনের লক্ষ্য ব্যাংকার, আমার- জীবনের লক্ষ্য চিঠি, আমার-জীবনের লক্ষ্য কি, আমার জীবনের লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ার হওয়া রচনা, আমার-জীবনের লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া অনুচ্ছেদ, আমার-জীবনের লক্ষ্য অনুচ্ছেদ, আমার-জীবনের লক্ষ্য শিক্ষক হওয়া অনুচ্ছেদ, আমার-জীবনের লক্ষ্য ব্যাংকার হওয়া, আমার-জীবনের লক্ষ্য রচনা class 9, আমার-জীবনের লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া, রচনা আমার-জীবনের লক্ষ্য, আমার জীবনের-লক্ষ্য শিক্ষক রচনা, আমার-জীবনের লক্ষ্য ডাক্তার, আমার-জীবনের লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ার হওয়া, বাংলা রচনা আমার-জীবনের লক্ষ্য, আমার জীবনের-লক্ষ্য রচনা class 2

এগুলিও পড়তে পারেন -

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button