যে পূজার বেদী রক্তে গিয়েছে ভেসে ….. ভাবস্প্রসারন

যে পূজার বেদী রক্তে গিয়েছে ভেসে ….. ভাবস্প্রসারন: নিম্নে মধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং অন্যান্য সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভাবস্প্রসারন শেয়ার করা হল। উক্ত ভাব সম্প্রসারণটির মূলভাব ও সম্প্রসারিত ভাব শেয়ার করা হল। এটিও পড়ুন – ” দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ ”
যে পূজার বেদী রক্তে গিয়েছে ভেসে ….. ভাবস্প্রসারন
মূলভাবঃ
যে পূজার বেদী রক্তে গিয়েছে ভেসে
ভাঙো ভাঙো, আজি ভাঙে তারে নিঃশেষে,
ধর্মকারার প্রাচীরে বজ্র হানাে,
এ অভাগা দেশে জ্ঞানের আলােক আনাে।
ভাবস্প্রসারনঃ
অধিষ্ঠিত দেবতাকে তুষ্ট করতে গিয়ে মানুষ যুগে যুগে জীবনাশে প্রবৃত্ত হয়েছে, এমন কি, নরনিধনেও তার হাত কম্পিত হয়নি। ধর্মের অন্তর্নিহিত মহত্ত্ব যে মানবতার মর্যাদাদান তা ভুলে গিয়ে সাম্প্রদায়িক মনােভাবের শিকার যেমন হয়েছে তথাকথিত ধর্মধ্বজীর দল, তেমনি পাশব হিংসার বশবর্তী হয়ে সমস্ত বিবেক বিসর্জন দিয়েছে। জ্ঞানের আলােকে প্রদীপ্ত চেতনা যুক্তি ও মুক্তির পথে প্রসারিত দীপবর্তিকা স্বরূপ। সঙ্কীর্ণ আচার, সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধি ধর্মকে মুক্ত মানুষের কারাগারে পরিণত করেছে, পূজার মঞ্চে দেবতার স্থলে হিংসাবৃত্তিকে বসিয়ে একদল মানুষ মনুষ্যত্বকে লাঞ্ছিত করে চলেছে। এ-রকম মঠ-মন্দির ভারতবর্ষে অসংখ্য আছে। অপরিমেয় ঐশ্বর্য ও গর্বের প্রতীক রূপে সে-সব মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে। অথচ সেখানে সমস্ত মানুষের প্রবেশাধিকার নেই, নিঃস্ব নিরন্ন মানবগােষ্ঠীর পরিচর্যার কোনাে আয়ােজন নেই, আছে বরং নরনির্যাতনের প্রশস্ত ব্যবস্থা।
এ-রকম অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভারতবর্ষের ভাবসম্প্রসারণ ও ধর্মের নামে মানবসমাজ অনেকবার রক্তে প্লাবিত হয়েছে। পূজার বেদীতে অন্ধকার কখনাে দূরীভূত হবে না। জ্ঞানের আলােকে দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যে এই কবিতাংশে তাই কবি বিশ্ববিধাতার কাছে ব্যাকুল হৃদয়ে প্রার্থনা জানিয়েছেন।
এগুলিও পড়ুন