উৎসবসংবাদ

বিশ্ব আদিবাসী দিবস – 9 August Indigenous Day

৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস দেশের নানা প্রান্তে পালিত হয়। বিভিন্ন দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্টী ও আদিবাসীদের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক পরিচয় তুলে ধরার গুরুত্ব নিয়েই পালন করা হয় এই আন্তর্জাতিক দিবসটি। আদিবাসী জনগণকে প্রাথমিক দিকে প্রথম জাতি, পাহাড়ি জনগোষ্ঠী, আদিম মানুষ, উপজাতি প্রভৃতি নামে চিহ্নিত করা হত। আদিবাসী শব্দটির প্রকৃত সংজ্ঞা ও তাদের অধিকার নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রয়েছে প্রচুর বিতর্ক। আদিবসি কোন উপজাতি নয়, তাঁরা নিজেরাই এক একটি জাতি। তাঁদের রয়েছে নিজস্ব আলাদা সংস্কৃতি, রয়েছে রীতিনীতি ও মূল্যবোধ।

বিশ্ব আদিবাসী দিবস

আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী দিবস (ইংরেজিতে International Day of the World’s Indigenous Peoples) প্রতিবছর ৯ আগস্ট পালন করা একটি আন্তর্জাতিক দিবস। জাতিসংঘ ১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পালন করে আসছে এই দিবসটি।

ইতিহাস

৫টি মহাদেশের ৪০টির বেশি দেশে বসবাসরত ৫ সহস্রাধিক আদিবাসী জনজাতি মানুষের সংখ্যা ৩০-৩৫কোটি। এদেরকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচয় প্রথম জাতি, উপজাতি, আদিবাসী, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠি, ক্ষুদ্র-জাতিসত্ত্বা পরিচয় পাওয়া যায়। তবে আদিবাসী শব্দের সুর্নিদিষ্ট সংজ্ঞা ও তাদের অধিকার নিয়ে রয়েছে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক তর্ক-বিতর্ক। জাতিসংঘে দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন আলোচনা-পর্যালোচনায় আদিবাসী সংজ্ঞা নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি। তবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার আদিবাসী জাতিসত্ত্বার আত্ম-পরিচয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অধিকার সংরক্ষণের জন্য আদিবাসী ও ট্রাইবেল জনগোষ্ঠি কনভেনশন-১৯৫৭(১০৭) ও পুনসংস্করণ আদিবাসী ও ট্রাইবেল জনগোষ্ঠি কনভেনশন-১৯৮৯(১৬৯) দুটি ধারা গৃহীত হয়।

এটিও পড়ুন – দুর্গাপূজা সময় নির্ঘণ্ট ও ক্যালেন্ডার, দুর্গা পুজার সময় সুচি

আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী দিবস স্বীকৃতি

২৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী দিবস International Day of the World’s Indigenous Peoples বা আর্ন্তজাতিক দিবসটি পালনে ৪৯/২১৪ বিধিমালায় স্বীকৃতি পায়। আর্ন্তজাতিক দিবসটি বিশ্বের ৯০টি দেশে ৩৭০ বিলিয়ন ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা ও আদিবাসী প্রতিবছর ৯ আগস্ট উদযাপন করে থাকেন। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৯৩ সালকে আদিবাসী বর্ষদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি ও আদিবাসী জনগণ তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার, অঞ্চল বা টেরিটরির অধিকার, প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি দাবীতে দিবসটি পালিত হয়। কানাডার অস্ট্রেলিয়ায় ৫২টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠি(আমাটা, বামাগা, কয়েন প্রভৃতি) বা আদিবাসী বসবাস করছে। আমেরিকায় ক্রো জাতি, আর্জেন্টিনায় কাসি জাতি।

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী দিবস উদযাপন

প্রতি বছর ৯ আগস্ট আর্ন্তজাতিক দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হলেও বাংলাদেশে ২০০৪ থেকে পালিত হয়ে আসছে। মূলত, ২০০১ সালে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম গঠিত হবার পরে বেসরকারীভাবে বৃহৎকারে আর্ন্তজাতিক দিবসটি পালিত হচ্ছে। দেশের সমতলে ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর জেলাগুলিতে সাঁওতাল, গারো, শিং, ওঁরাও, মুন্ডারি, মাহাতো, রাজোয়ার, কর্মকার ও মাহালী সম্প্রদায়ের জাতিগোষ্ঠি বসবাস করছে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, মুরং বা ম্রো, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া,বম, খুমী ও চাক জনগোষ্ঠি বসবাস করছে। বিশ্বের তাবৎ ক্ষুদ্র ও নৃ-জনগোষ্ঠির পাশাপাশি বাংলাদেশের ৩০ লক্ষাধিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি দাবীতে দিবসটি উদযাপন করে থাকেন।

বিভিন্ন দেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা ও আদিবাসীদের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক পরিচয় তুলে ধরার গুরুত্ব নিয়েই পালন করা হয় এই আন্তর্জাতিক দিবসটি।

ট্যাগঃ

বিশ্ব আদিবাসী দিবস, আদিবাসী দিবস, আদিবাসী কারা, আদিবাসীদের ইতিহাস, আদিবাসী সংস্কৃতি,আদিবাসী ও উপজাতির মধ্যে পার্থক্য,আদিবাসী ভাষা দিবস, আদিবাসীদের সমস্যা, আমেরিকার আদিবাসী,আদিবাসীদের ধর্ম , বিশ্ব আদিবাসী দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

এগুলিও পড়তে পারেন -

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button