ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় … ভাবসম্প্রসারণ
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানাে রুটি

ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানাে রুটি ভাবসম্প্রসারন শেয়ার করা হল।মনুষ্যে প্রীতি ভিন্ন ঈশ্বরে ভক্তি নাই ভাব ভাবসম্প্রসারন এর আগের পোষ্টে শেয়ার করা হয়েছিল চাইলে দেখে নিতে পারেন।
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় … ভাবসম্প্রসারণ
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানাে রুটি।
ভাবসম্প্রসারণঃ কাব্য, সঙ্গীত এবং অন্যান্য শিল্প আমাদের ভাবের জগতে পৌছে দেয়। কিন্তু সেই ভাবের দুটি রূপ আছে। এ জগৎকে স্বীকার করে তার সুখ-দুঃখকে স্পর্শ করে সুদূরের আকাশের দিকে তাকানাে যেতে পারে। আর জীবনের বাস্তব সুখ-দুঃখ, অভাব-অভিযােগ সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে সীমাহীন কল্পনার রাজ্যে মানসিক অভিসার করা যেতে পারে। প্রথমটি বাস্তবভিত্তিক, দ্বিতীয়টি বাস্তববর্জিত রােম্যান্টিকতা। রােম্যান্টিকতা কথাটির সঙ্গে সীমাহীন অতৃপ্তিবােধ জড়িত। অসীম অধরাকে স্পর্শ করা, দুর্গম দুঃসাধ্যকে জয় করার আকাঙক্ষা এবং এই আকাঙ্ক্ষার অচরিতার্থতাজনিত বেদনা রােম্যান্টিকতার প্রধান লক্ষণ। সাহিত্যের জগতে বাস্তবতা এবং রােম্যান্টিকতার সুনির্দিষ্ট বিভাগ করা যায় না। তবে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, আমরা যেমন খাওয়া-পরার জন্য জীবনধারণ করি না, তেমনি ক্ষুধাতৃষ্ণার অতি প্রত্যক্ষ প্রয়ােজনকে অবহেলা করেও বাঁচতে পারি না। যে লােক নিরন্ন, তার কাছে পূর্ণিমার চাদের সৌন্দর্য-সম্ভোগ আশা রা শুধু হাস্যকর নয়, নিষ্ঠুরতার নিদর্শন। জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম প্রয়ােজনীয় উপকরণগুলির সংস্থান যে ব্যক্তি বা জাতির জীবনে নেই, তার পক্ষে কাব্য বা শিল্পের উর্ধ্বলােকে বিচরণের আশা করা বাতুলতামাত্র। কোন দরিদ্র মাতা-পিতার ক্ষুধার্ত সন্তান যদি পূর্ণিমার চাদের মধ্যে তার আহার্য রুটির অস্তিত্ব কল্পনা করে তাকে গলাধঃকরণ করতে যায়, তবে তথাকথিত সৌন্দর্যের পূজারীরা পৃথিবী রসাতলে গেল বলে মনে করতে পারেন। কিন্তু সেই গরীব মা-বাবা ছেলের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে না দেওয়া পর্যন্ত শান্তি পান না। চাদ-মামার সৌন্দর্য হৃদয়ঙ্গম করানাে অপেক্ষা সন্তানের ক্ষুন্নিবৃত্তি করানােই তাদের কাছে তখন জরুরী। কবি বা শিল্পীরাও এই ক্ষুৎ-পিপাসা-পরিকীর্ণ সংসারেরই মানুষ। তাদের কেউ যদি অবাস্তব রােম্যান্টিকতার পরিবর্তে বাস্তব জীবনের সমস্যার উপর অধিক গুরুত্ব স্থাপন করেন, তবে তাকে পরিহাস করা চলে না, বরং তাঁর এই মনােভাবের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে গভীরভাবে ভেবে দেখার দায় স্বীকার করে নিতে হয়।
এটিও পড়ুন – জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর ভাবস্মপ্রসারণ