জানা অজানাস্বাস্থ্য

করোনা চিকিৎসায় আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া টোটকা

করোনা আবহে আমারা সকলেই অস্থির, কীভাবে নিজে সুরক্ষিত রাখবো আর এই জন্য করোনা রুখতে করোনা চিকিৎসায় আয়ুর্বেদিক টোটকা কিছু টিপস শেয়ার করা হল।

করোনাভাইরাস হল একই শ্রেণীভুক্ত ভাইরাস যারা স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখি আক্রান্ত করে। মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস শ্বাসনালী সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ মৃদু হতে পারে, অনেকসময় যা সাধারণ ঠাণ্ডাজ্বরের ন্যায় মনে হয় (এছাড়া অন্য কিছুও হতে পারে, যেমন রাইনোভাইরাস), কিছু ক্ষেত্রে তা অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে, যেমন সার্স, মার্স এবং কোভিড-১৯। করোনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও ইতিহাস এখানে

করোনা চিকিৎসায় আয়ুর্বেদিক টোটকা

করোনা রোগকে রুখতে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ট্রিটমেন্ট এর তথ্য অনুযায়ী, যে সব জিনিস ব্যবহার করলে করোনার বিরুদ্ধে রুখে দ্বারানো যায় সেগুলি হল-

  • তুলসী
  • দারুচিনি
  • আদা
  • গোলমরিচ
  • কিচমিচ
  • গুড়

তুলসীর গুনাগুনঃ

  • সর্দি কে খুব তাড়াতাড়ি সারাতে তুলসি পাতার রসের সাথে আদা ও মধু মিশিয়ে খেতে হবে। আবার গলার খুস খুস কমাতে শুধু মুখে কয়েকটা পাতা চিবিয়ে খেলে একটু আরাম পাওয়া যায়।
  • মুখের যে কোন সংক্রমন কে ঠিক করতে সাহায্য করে এই তুলসি। মুখের ব্যাক্টেরিয়া ও মুখের দুরগন্ধকে দূর করে এই পাতা।
  • দাতের হলদে ভাব দূর করতে ও মারিকে শক্ত করতেও প্রতিদিন নিয়মিত তুলসি পাতা খাওয়া উচিৎ।
  • যারা SMOKER তাদের জন্য খুবই উপকারি কারন এর মধ্যে থাকা Antioxidant Anticarcinogenic উপাদান মুখের ক্যানসার থেকে দূরে রাখে।
  • ডেঙ্গু অথবা ম্যালেরিয়া হলে তুলসি সিদ্ধ জল খেলে অনেক আরাম পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন, বোমি ভাবও দুর করে।
  • তকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রোনো দূর করতে তুলসির সাথে নীম পাতা ও চন্দন বেটে নিয়ে পেস্ট বানিয়ে লাগালে ব্রোনো কমে যায়। তাছাড়া মুখের যে কোন কালো দাগ দূর করতে তুলসির সাথে ব্যাসন মিসিয়ে পেস্টটি লাগালে দাগ দূর হয়।
  • তুলসি পাতা চন্দনের সাথে পেস্ট করে বামের মতন লাগালে মাথা ব্যাথা দূর হয়।
  • প্রতিদিন নিয়মিত ১০ থেকে ১২ টি করে পাতা খেলে মানসিক চাপকে দূরে রাখে এবং Liver কে পরিষ্কার রাখে বা Liver –এ পাথর জমতে বাধা দেয়।

দারুচিনি উপকারিতা

  • শরীরের জয়েন্টের সমস্যা দূর করতে দারুচিনির ভূমিকা অপরিসীম। এছাড়া বাতের ব্যথা ও শরীরের হাড়ের ব্যথায় চমৎকার কাজ দেয়। তাছাড়া, দারুচিনি মিশ্রিত সরিষার তেল গায়ে মালিশ করলে ব্যথা ভালো হয়।
  • দারচিনি পেটের জন্য দারুণ উপকারি। এটি অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে এবং পেটের ব্যথা উপশম করে পেট পরিষ্কার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • দারুচিনির গুড়ো রক্তে খারাপ কোলস্টেরল এলডিএল এর মাত্রা কমায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিষন্ত্রণ করে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী দারুচিনি।
  • ঈস্ট ছত্রাক ঘটিত ইফেকশন প্রতিরোধ করতে ও দারুচিনি ব্যবহারে চমৎকার ভাবে কাজ করে। হৃদরোগীদের জন্যেও দারুচিনি খুবই উপকারী। এটি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
  • দারুচিনি মারন ব্যাধি লিম্ফোসাইটিক লিউকোমিয়ার বিস্তার রোধ করে। রক্ত জমাট না বাঁধার অসুখ হিমোফিলিয়া প্রতিরোধ করতে দারুচিনি বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • ঠাণ্ডায় গলা ব্যথা বা খুশখুশে কাশিতে মধু চায়ের সাথে দারুচিনি মিশিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যায়।
  • ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধিতে এবং তৈলাক্ত ত্বকে ব্রন রোধ করতে দারুচিনি খুবই উপকারী।
  • নিয়মিত ভাবে দারুচিনি খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • আর্থারাইটিসের সমস্যায় দারুচিনির ভূমিকা অপরিসীম।

আদা উপকারিতাঃ

অক্ষুধাঃ খাবার বেশ কিছুক্ষণ আগে সৈন্ধব লবন দিয়ে একটু আদা চিবিয়ে খেলে মুখে রুচি ফিরবে ও ক্ষিধে বাড়বে। গলায় কফ জমে থাকলে পরিষ্কার করবে।

হিক্কা বা হেচকিঃ এক কাপ ছাগলের দুধের সঙ্গে এক চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে হেঁচকি কুমবে।
বসন্তঃ ১ চামচ আদার রস ও ১ চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে দুবার খেলেই বসন্তের গুটি বের হয়ে যাবে।
আমবাতঃ ১ চামচ আদার রস ও ১০ গ্রাম পুরানো আঁখের গুঁড় মিশিয়ে খেতে হবে ১ মাস রোজ সকালে একবার করে।
সর্দি ও জ্বরঃ জ্বর সর্দি কাশি হলে ১ চামচ আদার রস, ১ চামচ মধু, ১ চামচ তুলসীপাতার রস এবং ২ চামচ শিউলি ফুলের পাতার রস তিনদিন রোজ
দুবার করে।
জটিল আমাশয়ঃ শুকনো আদার গুঁড়ো ১ গ্রাম, এক কাপ ঈষৎ উষ্ণ জলে মিশিয়ে প্রতিদিন দুবার করে খেতে হবে ঠিক না হওয়া পর্যন্ত।

গোলমরিচ

আদি উত্‍স দক্ষিণ ভারত। গোল মরিচ একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ।

  •  শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে
  •  অন্ত্রের হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করে
  • কফ-ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করে
  • ওজন কমানোর চিকিত্‍সায় ব্যবহার করা হয়
  •  ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ব্যাহত করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
  •  প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
  •  গোলমরিচের তেল ব্যথা,যন্ত্রণা দূর করে
  •  ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে গোল মরিচ

কাড়া তৈরি করার পদ্ধতি

আয়ুষ মন্ত্রালয় দ্বারা প্রেরিত উপরোক্ত উপকরণ গুলি নিনে কাড়া তৈরি করে দৈনিক সেবন করলে করোনা থেকে আরোগ্য পাওয়া যাবে। নিম্নে কাড়া তৈরির উপকরণ ও কাড়া তৈরির পদ্ধতি আলোচনা করা হল।

কাড়া তৈরির উপকরণ

১) ১ লিটার জল
২) ১চামচ আদা (থেঁতো করা)
৩) ৮/ ১০ টি গান মরিচ(গুড়ো করা )
৪) পরিমান মত দারচিনিং ( থেঁতো করা)
৫)  ৮/১০টি তুলসি পাতা
৬) দেড় চামচ কিস মিস

কাড়া তৈরির পদ্ধতি

একটি পাত্রে জল গরম করে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর উপরোক্ত জিনিস ঢালতে হবে। উপকরণগুলি দেওয়ার পর ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর জলকে ছেঁকে নিতে হবে। তারপর ছেকে নেওয়া জলের মধ্যে লেবু কিংবা গুড় কিংবা মধু মিশিয়ে খেতে হবে । সারা দিনে ২/৩ বার উক্ত কড়া খেতে হবে।

এগুলিও পড়তে পারেন -

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button